এস আলম সুমন, কুলাউড়া

০৩ মে, ২০১৬ ১৫:৪২

'ভোট দিলেও কি না দিলেও কি আমরাতো বাগানের কামলা'

প্রতিদিন মানুষ আয় মেম্বারি ভোটের লাগি চেয়ারম্যানি ভোটের লাগি। নির্বাচন আইলে সবাইরে দেখা যায়। সবাই মায়াকান্না দেখায়। আমরাতো বাবু বাগানের কামলা। আমাদের হাজিরির টাকা (দৈনিক মজুরি) আমরা তলববারে পাই। তা দিয়েই বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে কোনমতে চলি। ভোট দিলেই বা কি না দিলেই বা কি? আমরাতো সারাজীবন বাগানের কামলাই কাটি (শ্রমিকের কাজ করি)। আমাদের কষ্টের সীমা নাই।

আসন্ন ইউপি নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে কুলাউড়ার কালিটি চা বাগানের নারী চা শ্রমিক চিলকামা নাইডু, লুইছ মাম্মা, চামেলী গোয়ালা ক্ষোভ প্রকাশ করে এভাবেই খেদোক্তি করলেন।

সরেজমিনে গেলে কালিটি ও রাঙ্গিছড়া চা বাগানের চিলকামা, বাসন্তী গোয়ালা, কুর্মী নাইডু, অনিমা অলমিকসহ কয়েকজন নারী শ্রমিক জানান, ভোটের সময় আসছে তাই চেয়ারম্যান, মেম্বাররা প্রতিদিনই আমাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিতে ব্যাস্ত থাকেন। আশ্বাস দেন নির্বাচিত হলে সরকারী সহায়তা দিবেন, কাজ দিবেন, বিপদে পাশে থাকবেন। ভোট শেষ হলে আর কাউকে খুঁজেও পাইনা। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাগানের চা পাতা তুলতে ব্যস্ত থাকি। একদিন কাজে না গেলে মজুরী ও রেশন কেটে রাখেন বাগানের বাবুরা। বাগানে চা পাতা চয়ন করে প্রতিদিন ৮৩ টাকা মজুরী পাই। বছরে ৭/৮ মাস বাগানে কাজ থাকে বাকি দিনগুলো কোন কাজ থাকেনা। ওই সময় খেয়ে না খেয়ে সন্তানদের নিয়ে সীমাহীন কষ্টে দিন কাটে।

তারা আরও জানান, অনেক সময় সপ্তাহবারে মজুরী পাওয়া যায়না। মজুরীর জন্য প্রতিবাদ করলে কাজ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন বাগান কর্তৃপক্ষ। এ সময় জনপ্রতিনিধিদের জানালেও তারা নীরব থাকেন। বারবার ধরনা দিয়ে সরকারী কোন সহায়হতার জন্য বলেও পাওয়া যায়না। ভোটের দিন ভোট দিতে গেলেও কাজ বন্ধ থাকে তাই মজুরী পাইনা।

বাগানের চা শ্রমিক গবীন্দ্র কৈরী, তাতা নাইডু, জনার্ধন, সূর্য্য নাইডু বলেন, এইবার ইউপি নির্বাচনে নৌকা আর ধানের শীষ প্রতীক থাকায় বড়ই বিপদে আছি। ভোট দিলেও নৌকা না দিলেও বলবে নৌকায় ভোট দিছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত