নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ জুন, ২০১৬ ১৭:১৭

বাবা-মা নেই, এখনো জানে না স্নেহা

ওসমানী হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে অরুনিমা রায় স্নেহা। কিছুক্ষণ আগে জ্ঞান ফিরেছে। জ্ঞান ফেরার পর থেকেই বাবা-মাকে খুঁজছে স্নেহা। স্বজনরা জানিয়েছেন, বাবা-মা অন্য ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। স্নেহাকে এখনো জানানো হয়নি তার বাবা-মা আর নেই।

মঙ্গলবার সকালে নগরীর আলুরতল এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন স্নেহার বাবা স্কলার্স হোম (শাহী ঈদগাহ) এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা অরজিৎ রায় (৫০) ও মা দক্ষিন সুরমার মহালক্ষী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুমিতা দাস (৪৫)। এ দুর্ঘটনায় অরুনিমা রায় স্নেহাও (১২) গুরুতর আহত হয়। স্নেহা স্কলার্সহোমের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।

চিকিৎসকরা জানান, স্নেহার অবস্থা এখন কিছুটা উন্নতির দিকে। জ্ঞান ফেরার পর থেকেই সে বাবা-মাকে খুঁজছে। বাবা-মায়ের মৃত্যুর সংবাদ তাকে জানানো হয়নি। ইনজেকশন দিয়ে তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে।

স্কলার্সহোমের শিবগঞ্জ ক্যাম্পাসের শিক্ষিকা ফারহানা জোহান সিলেটটুডেটোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্নেহা খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী। সে পঞ্চম শ্রেণীতে জিপিএ ৫ ও বৃত্তি পায়। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ওঠার পর স্কলার্সহোমের শাহী ঈদগাহ ক্যাম্পাসে চলে যায় স্নেহা।

নিহত সুমিতা দাশ কবি ও সংস্কৃতি কর্মী ধ্রুব গৌতমের বোন।

ওসমানী হাসাপাতালে বোনের মরদেহের পাশেই ছিলেন ধ্রুব গৌতম। সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা ধ্রুব জানান, সড়ক দুর্ঘটনার খবর আমি জানতাম না। মঙ্গলবার সকালে অফিসে গেলে সহকর্মীরা বাড়ি চলে আসার কথা বলেন। কেউ কেউ বলছিলেন হাসপাতালে যাওয়ার জন্য। অফিস থেকে ১১ টা নাগাদ হাসপাতালে আসি। এখানে এসেই জানতে পারি দুর্ঘটনার কথা।

মঙ্গলবার সকালে এমসি কলেজ ছাত্রবাস সংলগ্ন মাদানীবাগে প্রাইভেটকার ও অটোরিকশার সংঘর্ষে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। নিহতরা অটোরিকশার যাত্রী। দুর্ঘটনার পর পুলিশ প্রাইভেটকারের মালিককে আটক করেছে। ওই প্রাইভেটকারের মালিকও স্কলার্সহোম স্কুলের শিক্ষার্থীর অভিভাবক। নিজের মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।

তবে শাহপরাণ থানার ওসি শাহজালাল মুন্সী জানিয়েছেন, আটককৃত মিনু মিয়া পুলিশকে বলেছেন, দুর্ঘটনার সময় তিনি গাড়িতে ছিলেন না। চালক গাড়ি চালাচ্ছিলেন।

সকালে খাদিমপাড়া ইউপি'র শাহপরান নিপবন এলাকার বাসা থেকে বের হয়ে সিএনজি অটোরিক্সাযোগে নিজেদের কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন অরজিৎ রায় ও সুমিতা দাস। মঙ্গলবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে তাদের মরদেহ খাদিমপাড়ায় নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। আজকেই চারিবন্দেরস্থ শশ্মানঘাটে তাদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত