নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ জুন, ২০১৬ ২০:৫৮

ভারতীয় কাপড়ের দখলে সিলেটের ঈদবাজার

এবারও ভারতীয় কপড়ের দখলে সিলেটের ঈদের বাজার। ঈদের কেনাকাটায় সিলেটের ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ভারতের কাপড়। সিলেটের ফ্যাশন হাউসগুলোর ৭০ শতাংশ কাপড়ই ভারত থেকে আমদানীকৃত।

সিলেটের ফ্যাশন হাউসের বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সাথে আলাপ করে এমন তথ্য জানা গেছে। একই সাথে তারা এও জানান, দেশীয় পোষাকের প্রতি দিনদিন মানুষের চাহিদা বাড়ছে। বাংলাদেশী কটন ও ভালো প্রিন্টের কাপড়ের প্রতি ক্রেতাদের ঝোঁক বাড়ছে বলে জানান তারা।

ব্যবসায়ীরা জানান, সিলেটে এখনো ঈদের বাজার পুরোপুরি শুরু হয় নি। ক্রেতারা এখনো কাপড় কেনার ঘুরেফিরে দেখতেই অধিক আগ্রহী। তবে থান কাপড়ের দোকানে রমাজানের শুরু থেকেই ঈদের বেছাকেনা জমে উঠেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এবার সিলেটের পোষাক ব্যবসায়ীদের ঈদের বাজেট পাঁচশ’ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে ক’জন ব্যবসায়ী জানান।    

সিলেটের ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ঈদে ভারতীয় কাপড়ের মধ্যে জর্জেট ও সিল্কের কাপড় এবং মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ, ত্রি-পিছ সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। এই আইটেমগুলোতে ভারতীয় কাপড়ের একচেটিয়া আধিপত্য। মাপে সঠিক, মিহি সেলাই, ভালো ফিনিশিং হওয়ায় ক্রেতারা দেশীয় কাপড়ের চেয়ে ভারতীয় কাপড় কিনতেই বেশি আগ্রহী।

নগরীর আপন ফেব্রিকস’র সত্ত্বাধিকারী আহসান রাসেল বলেন, বাংলাদেশে সিল্ক কাপড় খুব ভালো হয় না। এছাড়া সুতি কাপড়েও মাপে ঠিক না। বিভিন্ন ক্রেতাদেরও দেশীয় কাপড়ে তেমন আগ্রহ নেই। এছাড়া সালোয়ার কামিজ, লেহাঙ্গা, থ্রি-পিসের ক্ষেত্রেও ক্রেতারা ভারতীয় কাপড়কেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। ক্রেতাদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে তার দোকানে ভারতীয় কাপড়ের প্রাধান্যই বেশি বলে জানান আহসান রাসেল। তবে বাংলাদেশী কাপড়ের মধ্যে কটন ভালো চলে বলে জানান তিনি।


সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক  ও সিটি সেন্টার ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম জানান, ক্রেতারা ভারতীয় কাপড় পছন্দ করে। এগুলোর দামও খুব একটা বেশি নয়। ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে সেলোয়ার-কামিজ, শাড়ি, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, শার্ট, বেডসিডের কাপড় পাওয়া যায়। দেশে সুতা না থাকায় ভালো কাপড় তৈরিও হয় না। তাছাড়া বিদেশী সবকিছুই ভালো, দেশী জিনিস খারাপ- এমন একটা মনোভাব রয়েছে আমাদের ক্রেতাদের মধ্যে। এর ফলে অনেকক্ষেত্রে ভারতীয় কাপড়ের প্রতি ক্রেতাদের অহেতুক আকর্ষনও লক্ষ্য করা যায়।

তিনি জানান, সিলেটের পোষাক ব্যবসায়ীরা মূলত ঢাকার আমদানীকারকদের কাছ থেকেই ভারতীয় কাপড় সংগ্রহ করে থাকেন। ঢাকার চাঁদনীর চক, গাউছিয়া, ইসলামপুর প্রভৃতি স্থান থেকে তারা ভারতীয় কাপড় পাইকারী দরে নিয়ে আসেন। এছাড়া সিলেটেরও কয়েকজন আমদানীকারক রয়েছেন। তাদের কাছে ওর্ডার দিলে তারা দোকানে দোকানে কাপড় পৌঁছে দেন। আবদু সালাম জানান, এখনো ঈদের বাজার পুরোপুরি জমে নি। তবে দু’একদিনের মধ্যে জমে উঠবে বলে আশা করি। ঈদে সিলেটের পোষাক ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ পাঁচশ’ কোটি টাকার মতো হবে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে ভারতীয় শাড়ি আমদানীকারী প্রতিষ্ঠান কবির এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী লুৎফুর রহমান বলেন, সিলেটে ভারতীয় ত্রি-পিছ সবচেয়ে বেশি চলে। তিনি জানান, মূলত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে ভারতীয় কাপড় এসে থাকে। এছাড়া বিমানযোগে ও বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়েও কিছু কাপড় আসে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত