তপন জ্যোতি তপু, ছাতক

৩০ জুন, ২০১৬ ০০:৩৭

একযুগেও সংস্কার হয়নি ছাতকের নোয়ারাই-বাংলাবাজার-বাঁশতলা সড়ক

ছাতকের নোয়ারাই থেকে বাংলাবাজার-বাঁশতলা ও নোয়ারাই-নরসিংপুর সড়ক ছাতক এবং দোয়ারাবাজার উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সড়কগুলো শুকনো মৌসুমে ধুলো ও বর্ষার কাদা-পানিতে মরণ ফাঁদে পরিনত হয়।

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় ধরে সড়ক দু’টি সংস্কারের দাবী করে আসছেন ৫ ইউনিয়নের ভুক্তভোগী মানুষ। কিন্তু সড়ক সংস্কার কাজের দাবী সংশ্লিষ্টদের কর্ণপাত না হওয়ায় অবহেলা ও অনাদরে পড়ে রয়েছে নোয়ারাই-বাংলাবাজার-বাঁশতলা ও নোয়ারাই-নরসিংপুর সড়ক।

মুক্তিযুদ্ধের ৫নং সাব-সেক্টর ও মুক্তিযোদ্ধাদের গণ-কবর হিসেবে ঐতিহাসিক স্থান হকনগরকে পর্যটন কেন্দ্রে পরিনত করার কার্যক্রম চালালেও এ স্থানে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক নোয়ারাই-বাঁশতলা সড়কটি মেরামতে সংশ্লিষ্টদের কোন আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। প্রায় ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নোয়ারাই-বাংলাবাজার-বাঁশতলা ও প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ নোয়ারাই-নরসিংপুর এবং প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ বালিউরা-চৌমুনীবাজার সড়ক বর্ষা এলেই মরন ফাঁদে পরিনত হয়। প্রতিটি সড়কই ভাঙ্গাচোরা ও বড়-বড় গর্তে ভরপুর হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বর্ষায় বৃষ্টির পানি জমে সড়ক গুলো ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে এসব সড়কে। ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশে অবস্থিত সীমান্ত ঘেঁষা ছাতকের নোয়ারাই, দোয়ারা উপজেলার বাংলাবাজার ও নরসিংপুর ইউনিয়নের দেড় শতাধিক গ্রামের মানুষের চলাচলের প্রধান সড়ক নোয়ারাই-বাংলাবাজার সড়ক। দীর্ঘদিন ধরে নোয়ারাইসহ ৫টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে এসব সড়ক দিয়ে।

ভুক্তভোগিরা নিয়মিত সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসলেও বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমলে নিচ্ছেন না। ফলে খানাখন্দে ভরপুর সড়ক দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন ও ভুক্তভোগী শ’শ’ মানুষ। সড়কটি ভাঙ্গাচােরার কারণে যানবাহনের ভাড়াও অধিক হারে গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। দিনেরবেলা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাত্রী সাধারণ যাতায়াত করলেও সন্ধ্যার পর বাংলাবাজার ও নরসিংপুর যাওয়ার মতো কোন বাহন পাওয়া অনেকটা দুষ্কর হয়ে পড়ে। এসব সড়ক দিয়ে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে অটোটেম্পু, ফোরষ্ট্রোক, পাওয়ার ট্রিলার ও মোটরসাইকেল। ভারী যানবাহন চলাচল না করলেও সড়কগুলোর বেহাল দশা ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চায় ছাতক-দোয়ারা অঞ্চলের মানুষ। নোয়ারাই থেকে বাংলাবাজার পর্যন্ত প্রায় ১৪কিলোমিটার সড়কে রয়েছে ২২টি ব্রীজ-কালভার্ড। প্রত্যেকটি ব্রীজ-কালভার্ডের উভয় পাশের এপ্রোচ দেভে যাওয়ায় যানবাহন উঠা-নামার সময় মারাত্মক বেগ পেতে হয় চালকদের।

এসব সড়কের টেম্পু চালক নিজাম উদ্দিন ও অটোরিকশা চালক লালুশাহ জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী পরিবহন করে আসছেন। রাস্তার বেহাল দশার কারনে তাদের গাড়ী গুলো ঘনঘন মেরামত করতে হয়। সংসারের ভরন-পোষনের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এসব ভাঙ্গা সড়ক দিয়ে গাড়ী চালাছেন তারা।  

ছাতক উপজেলা প্রকৌশলী সমরেন্দ্র দাস তালুকদার জানান, নোয়ারাই-বালিউরা পর্যন্ত সড়ক সংস্কারের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে দরপত্র আহবান করা হবে। বর্ষা মৌসুমের শেষের দিকেই এ সড়ক গুলোতে সংস্কার কাজ শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত