দেবকল্যাণ ধর বাপন

০৬ জুলাই, ২০১৬ ২১:৫৩

‘ভাংতি লাগবোনি’

নগরীর বন্দরবাজারের ক্বীন ব্রিজের সামনে সুরমা মার্কেটের পাশে কিংবা ব্রক্ষ্মময়ী বাজারের সামনে গেলেই দেখা যায় কিছু মানুষকে। হাতে এক তোড়া চকচকে টাকা নিয়ে হাটছেন, মুখে বলছেন ‘ভাংতি লাগবোনি, ভাংতি’। পাঁচশ বা হাজার টাকার নোটরে খুচরা দেন তারা। এছাড়া পুরোনো ছেঁড়া নোটের বিনিময়ে নতুন নোট দিয়ে থকেন। এটাই তাদের পেশা।

ঈদ এলে খুচরা ও নতুন টাকার চাহিদা বাড়ে। ফলে ঈদ এলে ব্যবসা বাড়ে এই ‘টাকা বদলকারীদের’।

ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে গত ৩ জুন থেকেই বন্ধ সবকটি ব্যাংক। সাধারণ লেনদেনের জন্য ৪ জুলাই ব্যাংক খোলা থাকলেও তা পর্যাপ্ত ছিল না সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের জন্য। ঈদের বাজারে খুচরা টাকার যেমন প্রয়োজন, তেমনি ঈদের দিন পরিবারের ছোটদের ‘ঈদ সালামি’ দিতে কিংবা ঈদের জামাতের পর ভিক্ষুকদের ভিক্ষা দিতেও প্রয়োজন খুচরা টাকার। খুচরা ও নতুন টাকার জন্য ব্যাংকের শূন্যস্থান পূরণ করছেন খুচরা টাকার ব্যবসায়ীরা।

ব্রক্ষ্মময়ী বাজারের সামনে টাকা ভাংতি নিতে এসেছিলেন হাসান মার্কেটের ব্যবসায়ী শাহীন আহমদ। তিনি জানান, তার কাপড়ের দোকানের ভাংতির প্রয়োজন মেটাতে গত সোমবার ব্যাংক থেকে বেশ কিছু টাকার খুচরা নিয়েছিলেন। কিন্তু ৬ তারিখ ঈদ হবে ভাবলেও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় ঈদ পিছিয়েছে একদিন এরফলে তিনি পড়েছেন খুচরা টাকা সংকটে। কিছু খুচরা টাকা নিতেই এখানে আসা।

সুরমা মার্কেটের সামনে কথা হয় মো. সেলিমের সাথে। তিনি এসেছেন ঈদের সালামি ও ভিক্ষা দিতে দশ ও বিশ টাকার নোট দিতে। হাজার খানেক টাকার নোটও খুচরা করেন তিনি এখানে। তিনি বলেন, “ব্যাংক বন্ধ, আর ঈদের আগে ব্যাংক থেকে খুচরা টাকা পাওয়া খুব ঝামেলার। তাই এখান থেকেই খুচরা টাকা নিচ্ছি। তবে ঈদের আগে এদেরকে একটু বেশি ভাট্টা দিতে হয়”।

সাধারণত টাকা খুচরা করাতে বা বদলাতে যে টাকা ভাট্টা বা কমিশন হিসেবে নেন খুচরা টাকার ব্যবসায়ীরা, ঈদকে সামনে রেখে তারা একটু বেশি কমিশন চাচ্ছেন বলেও অভিযোগ সাধারণ মানুষের। তবে ঈদের আগে এ ব্যবসায়ীরাও কাটাচ্ছেন ব্যস্ত সময়।

এই কাজ বৈধ না অবৈধ, জানতে চাইলে সুরমা মার্কেটের সামনের খুচরা টাকার ব্যবসায়ী জয়নাল আহমদ বলেন, “ভাই, এইটাই আমাদের রুজি রোজগার, আমাদের সংসার চলে এভাবেই। ব্যবসায় বৈধ না অবৈধ তা জেনে কী লাভ”?

আপনার মন্তব্য

আলোচিত