রাজীব রাসেল

০৭ জুলাই, ২০১৬ ২১:১৯

আছে আতঙ্ক, তবু আনন্দের খোঁজে

দেশজুড়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা ও হুমকির ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে ঈদের দিনটি উদযাপন করতে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন নগরীর মানুষ। ঈদের দিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত সিলেটের বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যান, ক্বীন ব্রিজ প্রাঙ্গন, কাজীর বাজার সেতু ঘুরে দেখা গেছে মানুষের উপচে পড়া ভীড়।

ঈদে বাইরে ঘুরে বেড়ানো আর আড্ডা-বিনোদনে ঈদ উৎসব কাটাতে অনেকেই বের হয়েছেন সপরিবারে, কেউ বা এসেছেন প্রিয়জন, বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে। সবার গায়ে ঈদের নতুন পোশাক। সকলে মিলে আড্ডা দিচ্ছেন, ফুচকা-চটপটি-আইসক্রিমের দোকানগুলোতে বাড়তি ভীড়। শিশুরা পার্কে বিভিন্ন রাইড চড়ছে, মশগুল হয়ে আছে হাসি-আনন্দে। এই একটা দিন যেন সকল ভয়-ভীতি ছাপিয়ে মানুষকে ভাসিয়ে দিচ্ছে উৎসবের আনন্দে।

বিকেলে নগরীর ধোপাদিঘীর পাড়ে বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যানের প্রবেশ পথে দেখা গেছে টিকেট প্রত্যাশী দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সারি। ভেতরে বিভিন্ন বয়সী মানুষের পদচারনায় মুখর উদ্যান চত্বর। নাগরদোলা, ম্যাজিক শো, ঘোড়ায় (কৃত্রিম)চড়া, বাম্পার রাইড, গেম অব ডেঞ্জার, লেকে নৌকা চড়া, রেলগাড়ি, স্লিপার ইত্যাদি রাইডে দেখা গেছে শিশু-কিশোরদের উপচে পড়া ভীড়। অভিভাবকরা রাইডগুলোর আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে ব্যস্ত খোশগল্পে।

উদ্যানে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে বেড়াতে এসেছেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ। তিনি বলেন, “ঈদের বিকেলটা একটু বাইরে কাটাতেই এখানে এসেছি। বাচ্চারা বিভিন্ন রাইডে চড়ে আনন্দ পাচ্ছে। বেশ ভালো লাগছে। আবার দেশজুড়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতার বেশ ভয়েও আছি। কোথাও নিরাপদ বোধ করছি না।”

ঘুরতে আসা জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুল হুদা জানান, “উদ্যানের সবগুলো রাইড বেশ ভালো, শিশুরা উপভোগ করছে। তবে উদ্যানের লেকের পানি বেশ নোংরা আর দুর্গন্ধযুক্ত।” তিনি এ ব্যাপারে উদ্যান কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর সাহানা পারভীন ঢাকার বাসিন্দা। কর্মসূত্রে এখন আছেন সিলেটে। তিনি বলেন, “সিলেট নগরীর ভেতরে বেড়ানোর জায়গা খুব বেশি নেই। তাই পার্কে এসেছি দুই মেয়েকে নিয়ে একটু সময় কাটাতে। বেশ ভালোই লাগছে।” উদ্যানের ভেতরে ডাস্টবিনের অপর্যাপ্ততা নিয়ে অভিযোগ করে তিনি বলেন, চারদিকে বিভিন্ন প্যাকেট, কাগজ, খোসা ইত্যাদি আবর্জনা ছড়িয়ে থাকাটা একটু অস্বস্তিকর।

ওসমানী শিশু উদ্যান কর্তৃপক্ষ জানান, সাধারণত দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উদ্যান খোলা থাকলেও ঈদ উপলক্ষ্যে এখন খোলা রাখা হচ্ছে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। উদ্যানে আগতদের নিরাপত্তা ও অন্যান্য সুবিধার দিকে আন্তরিক নজর রাখছেন বলে জানান উদ্যানের ব্যবস্থাপক।

উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে, মোটরসাইকেল পার্কিং এর জন্য আলাদা ব্যবস্থা রেখেছে উদ্যান কর্তৃপক্ষ। প্রতি মোটরসাইকেলের পার্কিং বাবদ নেয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। উদ্যানের ভেতরে ও বাইরে আছে নান রকম খাবারের দোকান।

ওসমানী উদ্যানের পাশাপাশি নগরীর সুরমা নদী সংলগ্ন ক্বীন ব্রিজ ও কাজীর বাজার সেতুতেও ছিলো বিনোদনপ্রিয় মানুষের ভীড়। চটপটি-ফুচকার দোকানগুলোতে বন্ধু, স্বজনদের নিয়ে আড্ডা দিয়ে ঈদ উপভোগ করছেন নগর ও নগরের বাইরে থেকে আগত লোকজন। 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত