তপন কুমার দাস, বড়লেখা

০৯ জুলাই, ২০১৬ ১৬:০৭

ঈদের ছুটিতে মাধবকুণ্ডে পর্যটকদের ঢল

এবার ঈদে টানা ছুটি। আর এই ছুটিতে প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে ঈদের দিন থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজার জেলার উত্তরের প্রান্তিক জনপদ বড়লেখা উপজেলায় এখন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড়।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একাধিক জঙ্গি হামলার আতঙ্ক ও ভয়ভীতি দমাতে পারেনি ঈদের আনন্দ।

দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড, দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ চা বাগান, আকাশস্পর্শী পাথারিয়া পাহাড় ও নয়নাভিরাম হাকালুকি হাওরও পর্যটকের মন ও দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে। বয়সের ভেদাভেদ ভুলে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিটি প্রাণে।

এখানকার উন্মুক্ত বাতাস, সবুজ প্রকৃতি আর অনেকটা অজানা ঐতিহাসিক নিদর্শন শহরের ক্লান্ত মানুষকে কাছে টেনে নিচ্ছে।

সরেজমিনে মাধবকুণ্ড বন বিভাগ, ইজারাদার ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঈদের দিন থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস এবং বাস বোঝাই করে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত দেখতে ভীড় করছেন ভ্রমণ পিপাসু মানুষেরা। লোকে লোকারণ্য মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক এলাকা। পর্যটকের আগমনে হাসি ফুটে উঠেছে পর্যটন এলাকার ব্যবসায়ীদের মাঝে।

ইজারাদার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন বৃহস্পতিবার প্রায় ৫ হাজার পাঁচশত, শুক্রবার প্রায় ৫ হাজার ও শনিবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পর্যটকের আগমন ঘটেছে এ জলপ্রপাতে। এবার ঈদ বর্ষাকালে হওয়ায় ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা ভীড় করেছেন মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে। প্রায় ২০০ ফুট উচ্চতার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, বিশাল পাহাড়, শ্যামল সবুজ বনরাজি বেষ্টিত ইকোপার্ক, পাহাড়ি ঝর্ণার প্রবাহিত জলরাশির কলকল শব্দ সবমিলিয়ে মাধবকুণ্ডে বেড়াতে গিয়ে মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা।

পর্যটকদের চিত্ত বিনোদনের জন্য পর্যটন কর্পোরেশনের নির্মাণ করা হাতি, পেঙ্গুইন, মৎস্যকন্যা, বাঘ, ভালুক, বক, ঈগল পাখি, কুমির, বানর ইত্যাদির ভাস্কর্য আগত শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীকে বাড়তি আনন্দ প্রদান করছে।

সিলেটের গোলাপগঞ্জ থেকে বেড়াতে আসা বেসরকারি নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিষয়ের শিক্ষার্থী রাখাল দাস বলেন, ‘আজই গোলাপগঞ্জ থেকে এসেছি। জলপ্রপাত দেখে ভালো লাগলেও তীব্র যানজটের কারণে অনেক জায়গা পায়ে হেঁটে আসতে কষ্ট হয়েছে।’

মাধবকুণ্ডে বেড়াতে আসা কলেজ শিক্ষার্থী এমদাদুর রাজ্জাক রাব্বি ও মোর্শেদ আহমদ বলেন, ঈদের ছুটিতে বন্ধুরা মিলে মাধবকুণ্ডে বেড়াতে এসেছেন। এখানকার পাহাড় ও প্রকৃতি দেখে তাদের খুব ভালো লেগেছে।

এদিকে এবারের ঈদ বর্ষাকালে হওয়ায় এশিয়ার বৃহৎ জলাভূমি হাকালুকি হাওরের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে। হাওরের নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য বন বিভাগের নির্মাণ করা ওয়াচ টাওয়ার, জল সিঁড়ি দৃষ্টি কেড়েছে সবার।

বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান শনিবার দুপুরে জানান, মাধবকুণ্ডে জলপ্রপাতে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় পর্যটন পুলিশসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত