জগন্নাথপুর প্রতিনিধি

০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০১:৪৩

রানীগঞ্জ গণহত্যা দিবস আজ

১ সেপ্টেম্বর রানীগঞ্জ গণহত্যা দিবস।

১৯৭১ সালের এ দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় নৌবন্দর হিসেবে খ্যাত কুশিয়ারা নদীর তীরে অবস্থিত জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারে গণহত্যা চালায়। পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় পুরো রানীগঞ্জ বাজার।

শ্রীরামসি গণহত্যার পরদিন রানীগঞ্জ বাজারে এ গণহত্যা সংঘটিত হয়।   

ইতিহাসের বর্বর এই নারকীয় তাণ্ডবে দেড় শতাধিক লোক মারা গেলেও হত্যাযজ্ঞের পর ৩৪ জনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়। অন্যদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। রানীগঞ্জ বাজারের এই ধ্বংসযজ্ঞের খবর তৎকালীন সময় বিবিসিতে প্রচারিত হয়।

ইতিহাস মতে, ৭১-এর পহেলা সেপ্টেম্বর রানীগঞ্জের সকল ব্যবসায়ী বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ক্রেতা, বড় বড় নৌকার মাঝিসহ ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্থানীয় রাজাকার এহিয়া ও রাজ্জাককে দিয়ে খবর পাঠানো হয় বাজারের রাজ্জাক মিয়ার দোকানে আসতে। এসময় কেউ কেউ ভয়ে পালালেও নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষা এবং ঝামেলা এড়ানোর জন্য শতাধিক মানুষ তাদের কথামতো উপস্থিত হন। সকলে জড়ো হবার পর কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই রশি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয় শতাধিক মানুষকে। পরে এদের নিয়ে যাওয়া হয় পাশের কুশিয়ারা নদীর তীরে। সেখানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে পেছন দিক থেকে গুলি করে রক্তে রঞ্জিত করে দেয় কুশিয়ারা নদীকে। প্রথম গুলিতে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়ায় একাধিকবার লাইনে দাঁড় করিয়ে হত্যা করা হয়।   

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাণীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীরা মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার সরবরাহ করত। বিষয়টি স্থানীয় কিছু রাজাকাররা পাক হানাদারদের জানিয়ে দেয় এবং পরে কিছু রাজাকারদের সহায়তায় পাক হানাদাররা বাজারের নিরীহ ব্যবসায়ী, নৌকার মাঝি, ব্যাপারী,সহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষদের গুলি করে হত্যা করে।   

নিহতদের লাশ নদীতে ফেলে দেওয়ায় অনেকের লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আজ ১ সেপ্টেম্বর প্রতিবছরের মতো এবারও শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে রয়েছে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত