নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:৫২

গোয়েন্দা নজরদারিতে সিলেটের আরো ত্রিশটি বিলাসবহুল গাড়ি

কারনেট সুবিধায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা হয় গাড়িগুলো

সিলেট থেকে গত তিন মাসে ৭টি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করেছেন শুল্ক গোয়ন্দোরা। এগুলো কারনেট সুবিধায় বিদেশ থেকে দেশে এনে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চালানো হচ্ছিলো। সর্বশেষ সোমবার ৩টি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এই তিন গাড়ির মূল্য প্রায় ৮ কোটি টাকা।

এছাড়া কর ফাঁকি দিয়ে আনা সিলেটের আরো অন্তত ৩০টি বিলাসবহুল গাড়ি নজরদারিতে রেখেছে গোয়ন্দোরা। যেকোনো সময় আটক করা হবে এ গাড়িগুলো। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

শুল্ক গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়- কারনেট সুবিধা নিয়ে শুল্ক ছাড়াই সিলেটের প্রবাসীরা যুক্তরাজ্য থেকে কোটি টাকা মূল্যের গাড়ি নিয়ে দেশে আসেন। পরে গাড়িগুলো ফিরিয়ে না নিয়েই তারা যুক্তরাজ্যে ফিরে যান। দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় গাড়ি বিকল হয়ে গেছে বা চুরি হয়ে গেছে এমন অজুহাত দেখিয়ে কারনেটকে ক্ষতিপূরণ বাবত গাড়ির দাম দিয়ে বিষয়টি দফারফা করে থাকেন তারা। পরবর্তীতে কারনেট সুবিধা নিয়ে শুল্ক ছাড়া আনা গাড়িগুলো জাল কাগজের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নেয়া হয়।

সূত্র মতে, পর্যটক হিসেবে আসা গাড়িগুলোর মাত্র ১০ ভাগ নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছে। বাকী প্রায় ৯০ ভাগই থেকে যাচ্ছে দেশে। ফিরে যাওয়ার তালিকায় তাও আবার কেবল বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার গাড়িই বেশি। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা মারসিডিজ বেঞ্জ, অডি, বিএমডব্লিউ, জাগোয়ার থেকে শুরু করে বিশ্বের নামিদামি ব্রান্ডের গাড়ি রয়েছে।

সোমবার শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন সময়ে পৃথক অভিযানে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের একটি ওয়ার্কশপ থেকে ‘মিতসুবিশি’ ব্রান্ডের ২৯৭২ সিসি’র জীপ গাড়ি ও ‘নিশান ৩০০ জেডএক্স’ ব্রান্ডের ৩০০০ সিসি’র গাড়ি আটক করা হয়। এছাড়া সিলটে নগরীর সুবিবাজার থেকে ‘জাগুয়ার এস টাইপ’ ব্রান্ডের ৪১৯৬ সিসি’র গাড়ি আটক করা হয়। আইনী  প্রক্রিয়া শেষে রোববার এ গাড়িগুলো জব্দ করা হয়। গাড়িগুলো সাময়িকভাবে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে শ্রীমঙ্গল থেকে আটককৃত গাড়ির মালিক পাওয়া যায়নি।

তিনটি গাড়ি জব্দের পর সোমবার দুপুরে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন যে, ভূয়া কাগজপত্র দাখিল করে বিআরটিএ থেকে এই গাড়িগুলো রেজিস্ট্রেশন করে নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ দিয়ে কারনেট তালিকায় নিয়ে আসা গাড়ির চেসিস নম্বর ও ইঞ্জিন নম্বরের সাথে এই গাড়ির চেসিস নম্বর ও ইঞ্জিন নম্বর মিলে যায়।

ড. মইনুল খান বলেন যে, শুল্ক গোয়েন্দারা মিথ্যা ঘোষণায় আনা এবং কারনেট সুবিধার অপব্যবহারের মাধ্যমে আনা গাড়ি আটকের জন্যে সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। এ পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলে মোট ৭ টি গাড়ি আটক করা হয়েছে। এরকম আরো ত্রিশটি গাড়ি আমাদের নজরদারিতে রয়েছে।

এরআগে ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর নগরী থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা দুইটি পাজেরো জিপ উদ্ধার করে পুলিশ। এই জিপদুটি এখনো সিলেট কতোয়ালি থানায় পড়ে রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত