নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ অক্টোবর, ২০১৬ ১৫:১৬

‘স্ত্রীকে হত্যা করতে না পেরে দুই সন্তানকে হত্যা’

ওসমানী নগরে দুই ছেলেকে হত্যার দায়ে বাবা আটক

সিলেটের ওসমানী নগরে স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের কারণেই বাবার হাতে খুন হয়েছে দুই শিশুপুত্র। স্ত্রীকে হত্যা করতে না পেরে দুই শিশুকে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করেছেন তাদের বাবা ছাতির আলী।

আটকের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য জানিয়েছেন বাবা ছাতির আলী।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় সিলেটের ওসমানী নগরের চিন্তামণি গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে আটক করে পুলিশ।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেটের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, দুই শিশু সন্তানকে ধারালো এক ধরনের চোখা লাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে ও মাথায় আঘাত করে খুন করেন ছাতির আলী। ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে তিনি কাছের কালীমন্দিরে পালিয়ে থাকেন। স্ত্রীর সঙ্গে পরিবারিক কলহের জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটান তিনি।

তিনি জানান, স্ত্রীকে প্রায়ই সন্দেহ করতেন ছাতির আলী। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্ত্রীকে মেরে ফেলা। স্ত্রীকে হত্যা করতে না পেরে সন্তানদের হত্যা করেন তিনি।

খুনের বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার দিন (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে দুই ছেলে মামুন (৭) ও রুজেলকে (১১) নিয়ে পাশ্ববর্তী হাওরে মাছ ধরতে যান ছাতির আলী। দুপুর দেড়টার দিকে বড় ছেলে রুজেলকে দিয়ে কিছু মাছ বাড়িতে পাঠান। এই সময়ের মধ্যে ছোট ছেলে মামুনকে (৭) খুন করেন।

আধাঘণ্টা পর রুজেল (১১) ফিরে এসে ছোট ভাইকে খুঁজতে থাকে। ছাতির আলী তাকে বলেন, এতো খোঁজাখুঁজি করছিস কেনো? এটি বলেই বড় ছেলে রুজেলের মাথায় লাঠি দিয়ে ছয়টি আঘাত করেন তিনি।

পুলিশ জানায়, শিশু মামুনের মাথার পেছনে দু’টি, পিঠের মাঝখানে ও নাভি বরাবর সুচালো ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আর বড় ছেলে রুজেলের মাথায় ছয়টি আঘাত করা হয়। আঘাতে তার মাথা থেঁতলে যায়। খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত নারিকেল গাছের তৈরি চোখা লাঠি ও বাঁশের একটি লাঠি জব্দ করেছে পুলিশ।

নিহতদের মা ও পরিবার-পরিজন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে আজ বুধবার মামলা দায়েরের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসমত আলী ও পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলার চিন্তামইন গ্রামের একটি হাওর থেকে মামুন মিয়া (৮) ও রুজেল মিয়া (১১) নামে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তখন থেকেই পলাতক ছিলেন তাদের বাবা ছাতির আলী। 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত