নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ অক্টোবর, ২০১৬ ১২:৩৭

সিলেটে মা মনি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ১২৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা

চিকিৎসকের অবহেলায় শিশুর মৃত্যু

সিলেটে জামায়াত পরিচা্লিত মা মনি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ১শ’ ২৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করেছেন এক নারী।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে সিলেটের যুগ্ম জজ ২য় আদালতে মামলাটি দায়ের করেন কানাইঘাট উপজেলার উমরগঞ্জের হালিমা বেগম।

মামলায় আসামি করা হয়েছে মোট ৯ জনকে। তারা হলেন- হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এমএ মতিন, পরিচালক ও জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আজির উদ্দিন আহমদ, নির্বাহী পরিচালক মোদাব্বির হোসেন, পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ খসরু, মুজিবুল হক, ব্যবস্থাপক জামাল আহমদ, ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. আবু নাঈম আহমদ ও ডা. সেতু ভৌমিক।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর হালিমা বেগম নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত তাঁর ৩ মাস বয়সী ছেলে আফনানকে নিয়ে শিশুবিশেষজ্ঞ ডা. এমএ মতিনের কাছে আসেন। শিশুটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত জানিয়ে ডা. মতিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে ইনসেন্টিভ কেয়ারে রেখে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। ‍কিন্তু ভর্তির পর রোগীর কোনো খোঁজ খবর নেননি ডা. মতিন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও সারারাত চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করেননি।

পরদিন ২৯ অক্টোবর শিশুটির অবস্থার আরো অবনতি হলেও ডা. মতিন অন্য হাসপাতালে রোগী দেখায় ব্যস্ত থাকেন। তিনি ফোন না ধরায় পরে ডা. মোদাব্বির ও ব্যবস্থাপক জামাল মুঠোফোনে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন জানিয়ে বার্তা (এসএমএস) পাঠান। কিন্তু তিনি তাতেও গুরুত্ব দেননি।

এর পরদিন বেলা পৌনে ১টার দিকে ইন্টার্ন চিকিৎসক আবু নাঈম আহমদ ও সেতু ভৌমিক ৩ মিলি’র স্থলে ৩শ মিলি'র ইনজেকশন পুশ করে শিশুটির মৃত্যু ঘটান।

অভিযোগে আরো বলা হয়, আসামিরা চিকিৎসায় অবহেলা, ভুল চিকিৎসা দিয়ে জীবন বিপন্ন করা, আলামত নষ্ট ও জালিয়াতির মাধ্যমে নতুন তথ্য সংযোজন করে অপরাধ করেছেন। এ কারণে বাদির ৩ মাস বয়সী একমাত্র ছেলে আফনান প্রাপ্ত বয়স্ক হতে ৭৫ বছর পর্যন্ত আয় জনিত ৫০ কোটি টাকা, পিতা-মাতা আত্মীয়স্বজনের সাহচর্য পাবার সুযোগ হারানো জনিত ক্ষতির পরিমাণ ২৫ কোটি টাকা, পিতা-মাতা, পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের মর্মপীড়া জনিত ক্ষতি ২৫ কোটি টাকা, হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে বাদির ছেলের শারিরিক কষ্ট হওয়া জনিত ক্ষতির জন্য ২৫ কোটিসহ সর্বসাকূল্যে ১শ’২৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।

আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিক আহমদ।

ঘটনার পর এতো দেরিতে মামলা দায়েরের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এর আগে কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় (জিআর-৫৩/২০১৩) পুলিশ তদন্ত করে জানতে পেরেছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অভিজ্ঞতাহীন, নার্সের কাজে নিয়োজিতরা প্রশিক্ষিত নন। এর  প্রতিবেদনও পুলিশ আদালতে দাখিল করেছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত