সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ নভেম্বর, ২০১৬ ১৭:৫৪

‘দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রুশ বিপ্লব পথ দেখাবে’

রুশ বিপ্লবের শততম বর্ষের সূচনা ও দলের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার উদ্যোগে শনিবার বিকাল  ৪ টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।

 জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন  বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন দুলাল এবং সভাপতিত্ব করেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার আহবায়ক উজ্জল রায়।

জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট হুমায়ুন রশীদ সোয়েব এবং পরিচালনা করেন সুশান্ত সিনহা সুমন।

জনসভার পূর্বে একটি শোভাযাত্রা সিলেট রেজিষ্টারি মাঠ থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে জনসভায় মিলিত হয়। র‌্যালীর অগ্রপভাগে ছিলো শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে মার্চ পাস্ট।

জনসভায় বক্তারা বলেন, ৯৯ বছর পূর্বে ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর পুজিবাদী শ্রেণিকে পরাজিত করে রাশিয়ায় বলশেভিক পার্টির নেতত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় শ্রমিক শ্রেণির রাষ্ট্র। সেদিন মহামতি মার্কস-এঙ্গেলস এর সুযোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কমরেড লেনিন। সেদিন সমাজতন্ত্র পুরো পুথিবীর মানুষকে দেখিয়েছিল শোষণহীন সমাজের স্বপ্ন। কমরেড লেনিনের মৃত্যুর পর তার সুযোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে কমরেড স্ট্যালিন দূর্বার গতিতে এগিয়ে নিয়েছিলেন সমাজতন্ত্রের জয় নিশানা। বিশ্ব পুজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী চক্র নানাভাবে চক্রান্ত করেও রুখতে পারেনি ইতিহাসে অমোঘ পরিণতি সমাজতন্ত্রকে। এমনকি হিটলারের মত ফ্যাসিস্ট শক্তিকেও রুখে দিয়েছিলেন কমরেড স্ট্যালিন। মানুষকে দিয়েছিল মানুষের মত বেচে থাকার অধিকার। আজ সেখানে সমাজতন্ত্র নেই, কিন্তু কি অবস্থা রাশিয়ার জনগনের। পতিতবৃত্তি, ক্ষুদা, দারিদ্র সেখানে এখন স্বাভাবিক ব্যাপার।

সমাজতন্ত্রের উচ্ছেদের সাথে সাথে মানুষের অধিকারও সেখান থেকে উচ্ছেদ হয়েছে।এছাড়া ১৯৮০ সালের ৭ নভেম্বর আমাদের মহান পার্টি বাসদ (মার্কসবাদী) এদেশে একটি শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ নিয়ে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়। আমাদের দেশ একটি পুজিবাদী রাষ্ট্র হওয়ায় দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজ ও বিশেষ করে সংস্কৃতিসহ জীবনের সমস্ত ক্ষেত্র সংকটের কালো মেঘে ঢাকা পড়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়ে দফায় দফায় চলছে সংখ্যালঘু নির্যাতন । গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাওতালদের উপর আক্রমন করে হত্যা করছে সাওতালদের। এই সমস্ত আক্রমনে রয়েছে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সম্পৃক্ততা। উন্নয়নের নামে সুন্দরবন বিনাসী রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। সারা বিশ্বের মানুষ এর বিরোধীতা করলেও সরকার তার ক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে ভরতকে তুষ্ট করার জন্য এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এছাড়া গ্যাস বিদ্যুতের দামও দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে।
ফলে এই অবস্থায় বেকারত্ব, ছাটাই, মূল্যবৃদ্ধি, মনুষ্যত্ব ও নৈতিকতার সংকট, ধর্মীয় মৌলবাদ ইত্যাদির হাত থেকে মানব সভ্যতাকে বাচাতে হলে দেশে দেশে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারাকে হাতিয়ার করে সাম্রাজ্যবাদ-পুজিবাদ বিরোধী সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত