সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৪:০৩

ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ

আজ ১১ ডিসেম্বর ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দখলদার বাহিনীর হাত থেকে এই দিন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা মুক্ত হয়। মুক্ত হওয়ার কয়েক ঘন্টা পূর্ব থেকে ফেঞ্চুগঞ্জ কুশিয়ারা নদীর রেলওয়ে ব্রীজের দুই তীরে মুক্তিবাহিনীর সাথে পাক সেনাদের প্রচন্ড লড়াই হয়। এ সময় পাক সেনারা উপজেলার ওসমানী সড়ক মোড়ে গাড়ী এবং যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়। এর কিছুক্ষণ পরই পাক সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে থাকে।

১৯৭১ সালের ৪ঠা মে পাক সেনারা ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় প্রবেশ করেই প্রথমে তৎকালীন আওয়ামীলীগ নেতা উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মরহুম আছকর আলীর বাড়িতে হানা দিয়ে তার পুত্র শহীদ আসাদুজ্জামান বাচ্চুকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। এ সময় বাড়ির অন্য সদস্যদের খুঁজতে থাকে। তারা পূর্ব থেকেই বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। তথ্যমতে ফেঞ্চুগঞ্জের পাক সেনাদের হাতে প্রথম শহীদ আসাদুজ্জামান বাচ্চু।

পাক সেনা ফেঞ্চুগঞ্জে প্রবেশের পর প্রথমেই ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারে ‘‘কাইয়ার গুদামে’’ ক্যাম্প স্থাপন করে এবং এই ক্যাম্প ছিল পাক সেনাদের নির্যাতন এবং নিরীহ বাঙ্গালিদের হত্যাকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু। অনেক জানা অজানা নিরীহ বাঙ্গালিকে ধরে নিয়ে এই ক্যাম্পে নির্যাতন করা হতো। অনেককে হত্যা করে ভাসিয়ে দেয়া হতো কুশিয়ারা নদীতে। তাই কাইয়ার গুদামটি কালের সাক্ষী হয়ে এখনও দাঁড়িয়ে আছে। দাঁড়িয়ে আছে কাইয়ার গুদামের পাশের বিশাল শিমূল গাছটি। এই গাছের উপরে পাক সেনাদের পাহারা বসানো হতো।

যুদ্ধ চলাকালে উপজেলার মাইজগাঁও এলাকার নজরুল ইসলাম পংকীকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। যুদ্ধ শুরুর পূর্ব এবং পরবর্তী সময়ে গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার কঠিন কাজে যারা নিয়োজিত ছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন তৎকালীন আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম আব্দুল লতিফ, আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম আরকান আলী, প্রয়াত ডাঃ রথীন্দ্র কুমার নাথ, তৎকালীন ছাত্রনেতা হবিবুল ইসলাম শাহ, ডাঃ আবুল হোসেন, শ্রমিক নেতা মরহুম ইসকন্দর আলী, মরহুম হাজী করম উল্লাহ, এম এইচ খান হুরু মিয়া, ডাঃ দেওয়ান নুরুল ইসলাম চঞ্চল, মরহুম মজাহিদ আলী জড়া মাষ্টার, মরহুম আলাউদ্দিন পীর, মরহুম আব্দুল গনি স্যার সহ অনেকেই।

হত্যা, লুন্ঠন এবং অগ্নিসংযোগের পর ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের প্রথম দিকে ফেঞ্চুগঞ্জ এবং আশপাশ এলাকা গোলাবারুদ সহ মুক্তিবাহিনী ঘিরে ফেলে। এ সময় দখলদার বাহিনীর সাথে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রচন্ড লড়াই হয়। দখলদার বাহিনী পরাস্ত হয়ে আত্মসমর্পন করতে থাকে। কেউ কেউ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

এ লড়াইয়ের পর অনেক পাক সেনার নিথর দেহ বাংকারে পড়ে থাকতে দেখেছে মুক্তিযোদ্ধারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত