নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৬:১৫

১৫ ডিসেম্বর খাদিজাকেও আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ

আগামী ১৫ ডিসেম্বর কলেজ ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সিলেট মহানগর মূখ্য হাকিম সাইফুজ্জামান হিরো। তাকে হত্যাচেষ্টা মামলার স্বাক্ষ্য দিতে খাদিজার নামে এই সমন জারি করেন আদালত। রোববার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এই নির্দেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, রোববার চাঞ্চল্যকর এই মামলার স্বাক্ষ্যপ্রদান করতে আসলে খাদিজার বাবা মাসুক মিয়ার কাছে খাদিজার শারিরীক অবস্থার কথা জানতে চান আদালত। এসময় খাদিজা আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দিতে পারবে কি না এ ব্যাপারেও বাবার কাছে জানতে চাওয়া হয়।

জবাবে মাসুক মিয়া আদালতকে বলেন, চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করে এবিষয়ে জানাতে হবে। তবে চিকিৎসকরা অনুমতি দিলেও সড়কপথে তাকে ঢাকা থেকে সিলেট আনা যাবে না।

এসময় খাদিজার বাবাকে উদ্দেশ্য করে বিচারক বলেন, আমি সমন জারি করে দিচ্ছি। আপনি চিকিৎসকের সাথে কথা বলে আমাকে জানান।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) মাহফুজুর রহমান জানান, খাদিজা সিলেটের আসার মতো সুস্থ থাকলে আগামী তারিখে তাকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে স্কয়ার হাসপাতালে খাদিজার চিকিৎসা তত্ত্বাবধানকারী চিকিৎসকেও ১৫ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

এই দু'জনসহ মোট ৫ সাক্ষীকে ১৫ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। আজ (রোববার) সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। আজ এই মামলায় খাদিজার বাবা মাসুক মিয়াসহ ১৫ সাক্ষীর স্বাক্ষ্য নেওয়া হয়। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই মামলার ১৭ জন স্বাক্ষী স্বাক্ষ্য দেন। তাদের মধ্যে এমসি কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, আহত অবস্থায় খাদিজাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কলেজ শিক্ষার্থী ইমরান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়েছেন।

এই আদালতের এপিপি মাহফুজুর রহমান জানান, খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় মোট সাক্ষী ৩৭ জন। খাদিজা এই মামলার ২য় সাক্ষী।

উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর সিলেট এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হন খাদিজা। প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর সেখান থেকে ৪ অক্টোবর তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে এনে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়। স্কয়ার হাসপাতালে প্রথম দফায় খাদিজার মাথায় ও পরে হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। তার অবস্থার একটু উন্নতি হলে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। এরপর আইসিইউ থেকে এইসডিইউ-তে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে ২৬ অক্টোবর তাকে কেবিনে নেওয়া হয়। এরপর আবারো মাথায় ও হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠার পর সম্প্রতি স্কয়ার থেকে সিআরপিতে নেওয়া হয় খাদিজাকে।

হামলার দিন ঘটনাস্থল থেকে বদরুল আলম আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। আদালতে হামলার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন বদরুল। বদরুলের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে। বদরুল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বহিষ্কার করে। পরে স্থায়ী বহিষ্কার করে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত