নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ এপ্রিল, ২০১৭ ১৬:২৩

ডা. শামসুদ্দিনসহ সদর হাসপাতালে শহীদদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদানের দাবি

নাগরিক মৈত্রী, সিলেটের উদ্যোগে শোকর‌্যালি ও শ্রদ্ধা

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সিলেট সদর হাসপাতালে (বর্তমান শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ) কর্তব্যরত অবস্থায় বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে প্রাণ হারানো শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ, ডা. শ্যামল কান্তি লালা, নার্স মাহমুদুর রহমান ও অ্যাম্বুলেন্স চালক কোরবান আলীকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদানের দাবি জানানো হয়েছে।

রোববার নাগরিক মৈত্রী, সিলেট আয়োজিত শোকর‌্যালি কর্মসূচি থেকে বক্তারা এ দাবি জানান।

১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল সিলেট সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে প্রাণ হারান ডা. শামসুদ্দিন আহমদ, ডা. শ্যামল কান্তি লালা ও তাদের কয়েকজন সহকর্মী।

প্রতিবছরের মতো এবারও নাগরিক মৈত্রী, সিলেট বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে। ওই দিন বেলা ২টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর সিলেট কেন্দ্রিয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে শোকর‌্যালি শুরু হয়ে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে স্থাপিত শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। শোক র‍্যালিতে শহীদ পরিবারের সদস্য ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ব্যারিস্টার আরশ আলী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট মহানগর ইউনিটের কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মণ, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হোসেন আহমদ, প্রেসক্লাব ফাউন্ডেশন সিলেট’র সভাপতি আল-আজাদ, সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরামুল কবির, মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী, সিলেট ওভারসীজ সেন্টারের নির্বাহী অফিসার শামসুল আলম, সেক্টর কমান্ডার ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ একাত্তর’র সিলেট বিভাগীয় সভাপতি এডভোকেট সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল, শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদের ছোট বোন সুফিয়া খানম, ভাই জে.এম ফেরদৌস, ভাগ্নি ফরিদা নাসরিন, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ.জেড রওশন জেবীন রুবা, ডা. নাজরা চৌধুরী, সংস্কৃতি কর্মী রাজিব দে চৌধুরী, মামুন পারভেজ সহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার লোকজন।

শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ‘নাগরিক মৈত্রী’ সিলেটের আহবায়ক এডভোকেট সময় বিজয় সী শেখর বলেন, একাত্তরের ৯ এপ্রিল তৎকালীন সিলেট সদর হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় ডা. শামসুদ্দিন আহমদ, ডা. শ্যামল কান্তি লালা, নার্স মাহমুদুর রহমান ও অ্যাম্বুলেন্স চালক কোরবান আলী সহ কয়েকজনকে গুলি করে হত্যা করে হানাদার বাহিনী। ঘৃণ্য এ হত্যাকাণ্ডের ৪৫ বছর পেরিয়ে গেলেও তাদেরকে কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করা হয়নি।

দীর্ঘদিন ধরে দেশমাতৃকার এ শহীদ সন্তানদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছে নাগরিক মৈত্রী, সিলেট। আর এরই অংশ হিসেবে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

জাতির ওই সূর্যসন্তানদেরকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে এডভোকেট সময় বিজয় সী শেখর বলেন, যাদের রক্ত ও প্রাণের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন। তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান জানিয়ে কিছুটা হলেও আমাদেরকে ঋণমুক্ত হতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত