শিপার আহমেদ, বিয়ানীবাজার

১০ এপ্রিল, ২০১৭ ১৬:৫৯

বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচন: প্রতীক, না আঞ্চলিকতা!

বিয়ানীবাজার পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে। দলীয় অথবা স্বতন্ত্র প্রতীক নিয়ে বাড়ি-বাড়ি যাচ্ছেন মেয়র, কাউন্সিলার হতে আগ্রহীরা। ভোট চাইছেন নিজের পক্ষে, দলের পক্ষে। ভোটাররা প্রাণখুলে বলছেন, প্রার্থীরাও মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে কৌশলী কাঁদা ছুড়াছুড়ি করছেন। আগামী ২৫ এপ্রিল এ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

দীর্ঘ ১৬ বছর পর এ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকে মাইকযোগে প্রচারণা আর বাড়ি-বাড়ি গিয়ে লিফলেট বিতরণের দৃশ্য অনেকদিন পর উপভোগ করছেন পৌরবাসী। মাইকের ঘোষকের মনভোলানো নানাকথা নিয়েও বিশ্লেষণ করছেন ভোটাররা। প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুস শুকুরকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন; তিনি ওই নোটিশের জবাবও দিয়েছেন।

বিয়ানীবাজার পৌরসভার আসন্ন প্রথম নির্বাচন এমনিতেই অনেক নাটকীয়তায় ঠাসা। তফসিল ঘোষণার পরও নির্বাচন হবে কিনা, এ নিয়ে শঙ্কা ছিল পৌরবাসীর। তবে সময় গড়ানোর সাথে এ শঙ্কা কেটে যায়। এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় অনেক প্রার্থী বেকায়দায় আছেন। ভোটাররাও নানা হিসাব মেলাতে ব্যস্ত। তারা প্রতীক পছন্দ করবেন নাকি আঞ্চলিকতায় গুরুত্ব দিয়ে ভোট দিবেন, তার সমীকরণ এখনই মেলাতে পারছেন না কেউ।

জানা যায়, বিয়ানীবাজার পৌর এলাকার শ্রীধরা-নবাং অঞ্চল থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন পৌর বিএনপির সভাপতি আবু নাসের পিন্টু। কসবা-খাসা অঞ্চল থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুস শুকুর। ফতেহপুর, নয়াগ্রাম, দাসগ্রাম, লাসাইতলা, খাসাড়ীপাড়া অঞ্চল থেকে জগ মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং বর্তমান প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন, নিদনপুর-সুপাতলা এলাকা থেকে মোবাইল মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবুল কাশেম পল্লব এবং রেল ইঞ্জিন মার্কা নিয়ে জামায়াতে ইসলামী নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা জমির হোসাইন। এছাড়া শ্রীধরা এলাকা থেকে জাসদ সমর্থিত প্রার্থী শমসের আলম মশাল মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনী প্রচারণায় একাধিক প্রার্থী গোপনে আঞ্চলিকতার বিষয়টি নিয়ে আসছেন বলে জানা গেছে, তবে প্রকাশ্যে তা কেউ স্বীকার করতে রাজি নন।

বিয়ানীবাজার পৌরসভার ২৫ হাজার ২৪ জন ভোটার এবার প্রথমবারের মতো পৌর নির্বাচনে ভোট প্রদান করবেন। এ পৌরসভায় পুরুষ ভোটারের চেয়ে মহিলা ভোটার ১৬৪ জন বেশি। পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৪শ’৩জন এবং মহিলা ভোটার ১২ হাজার ৫শ’ ৯৪ জন। ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট ৬ নং ওয়ার্ডে। ভোট সংখ্যা ৩ হাজার ৭শ’ ৭১ ভোট।

এখনো কোন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর বিরুদ্ধে বড় কোন অভিযোগ উত্থাপন করেননি। প্রশাসনের বিরুদ্ধেও প্রার্থীদের কোন অভিযোগ নেই।

পৌর নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ মো. কামাল হোসেন জানান, আমরা সতর্ক রয়েছি। কাউকে বিশেষ কোন সুবিধা দেয়ার সুযোগ নেই। প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করবে। সুতরাং ভোট হবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অবাধ। যে জয়লাভ করবে সেই হবে জনগণের প্রতিনিধি। এক্ষেত্রে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত