নাবিদ হাসান

১১ এপ্রিল, ২০১৭ ২১:৪৯

পহেলা বৈশাখে মায়েদের জন্য শাড়ি ডিজাইন করছে অটিস্টিক শিশুরা

পহেলা বৈশাখের জন্য শাড়ি ডিজাইন করছে শিশুরা। তাদের সকলেই অটিস্টিক। এসব শাড়ি তারা নববর্ষে উপহার দিবে নিজেদের মায়েদের। নিজের ছেলেমেয়েদের ডিজাইন করা শাড়ি পহেলা বৈশাখে পড়বেন মায়েরা।

সিলেট নগরীর কুমারপাড়ার সিলেট আর্ট এন্ড অটিস্টিক স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, আপন মনে শাড়িতে রং মেশাচ্ছে ১২ অটিস্টিক শিশু। এরা সকলেই এই স্কুলের শিক্ষার্থী।

এবারের পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে ‘আগামীর আকাশে উড়াবো নতুন ঘুড়ি’ স্লোগানে সিলেট আর্ট এন্ড অটিস্টিক স্কুলের উদ্যোগে অটিস্টিক শিশুদের আঁকা ছবি নিয়ে চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ১২ দিন ব্যাপী এ চিত্রপ্রদর্শনী শেষ হবে পহেলা বৈশাখ।

প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ২২ জন অটিস্টিক শিক্ষার্থীর নানান চিত্রকর্ম। কেউ এঁকেছে পাখির ছবি, আবারো কেউ নদীমাতৃক বাংলাদেশের ছবি, কেউবা মাছের ছবি। তবে তাদের চিত্রকর্ম দেখে বুঝার কোন ছাপ নেই যে তারা অটিস্টিক শিশু।

এই প্রদর্শনী চলাকালীন সময়েই নিজেদের মায়েদের জন্য নববর্ষের বিশেষ উপহার শাড়ি ডিজাইন করছে শিশুরা।

কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির সদস্য সচিব ইসমাইল গনি হিমনের সাথে। তিনি বলেন, এবারের পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে ১২জন অটিস্টিক শিশু তাদের মায়ের জন্য শাড়ির ডিজাইন করেছে। যা পরে মায়েরা যোগ দেবেন এবারের বৈশাখের অনুষ্ঠানমালায়।

তিনি বলেন, যে শিশুরা স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে পারে না, তাদের উপহার পেয়ে মা-বাবারা অনেক আনন্দিত হচ্ছেন।

হিমন জানান, এবারের পহেলা বৈশাখকে সিলেটের জেলা প্রশাসকের বানানো শুভেচ্ছা কার্ডের স্থান পেয়েছে এই এক অটিস্টিক শিশুর আঁকা ছবি। লাবিব ইবনে আজিজ নামের একজন অটিস্টিক শিশুর চিত্রকর্ম করে নববর্ষের শুভেচ্ছা কার্ড করেছেন জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার।

লাবিবের বাবা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক এন্ড এনিম্যাল ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক সারোয়ার আকরাম আজিজ সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এধরণের শিশু সবার মাঝেই কিছু প্রতিভা লুকায়িত থাকে। তাদের অবজ্ঞা না করে প্রতিভাগুলো আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। বুঝতে হবে তাঁরা কি চায়।

তিনি বলেন, অভিভাবকদের হাল ছেড়ে দিলে চলবে না লেগে থাকতে হবে। তবেই সাফল্য আসবে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার বলেন, আমার মনে হয়েছে, এসব অটিস্টিক শিশুদের পাশে দাঁড়ানো দরকার। তাই আমি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমি নিয়মিত তাদের খোঁজ খবর রাখি। তারা ভীষণ মেধাবী, প্রয়োজন কেবল সহযোগিতার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত