নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ এপ্রিল, ২০১৭ ১৯:৫১

জঙ্গি রিপনের ফাঁসি কার্যকরে প্রস্তুত ১০ জল্লাদ

সিলেটে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি কার্যকর করতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০ জল্লাদকে।

আজ রাতেই সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রিপনের ফাঁসি কার্যকর করা হবে। এ জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে কারাগার ও এর আশপাশের নিরাপত্তা। সন্ধ্যার পর রিপনের পরিবারের সদস্যরাও তার সঙ্গে শেষ দেখা করেন।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ছগির মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।

ছগির মিয়া জানান, জল্লাদ মো. ফারুকের নেতৃত্বে ১০ জন জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আসামি রিপনকে এখন ১০ নম্বর সেলে রাখা হয়েছে। সন্ধ্যার পর রিপনের পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে শেষ দেখা করতে আসেন। সাক্ষাৎ শেষে রিপনকে তওবা পড়ানো হবে। তওবার পর মঞ্চের পাশে তাঁকে বিশেষ সেলে নিয়ে রাখা হবে। ফাঁসি উপলক্ষে মঞ্চ ও বিশেষ সেলে নতুন করে লাল রং করা হয়েছে।

রিপনের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের কোনাগাঁও গ্রামে।

মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রপতির কাছে করা রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়। এরপর তা রিপনকে পড়ে শোনানো হয়। পরে দুপুরে কারাগারে এসে রিপনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁর বাবা আবদুল ইউসুফ, মা আজিজুন্নেছা, ভাই নাজমুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী। আজ তাঁরা আবার শেষবারের মতো সাক্ষাৎ করতে আসবেন।

২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামাল উদ্দিন। এ ছাড়া হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া। এ ঘটনায় আহত হন আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন।

এই মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রায়ে হরকাতুল জিহাদের প্রধান মুফতি হান্নান, সাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এই রায় আপিলেও বহাল থাকে।

আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তিন আসামি রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। তাঁদের আবেদন গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়। এরপর প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন দণ্ডপ্রাপ্তরা। কিন্তু রাষ্ট্রপতি তাঁদের সেই আবেদন খারিজ করে দেন।

ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া অপর দুই জঙ্গি হরকাতুল জিহাদের প্রধান মুফতি আবদুল হান্নান ও তাঁর সহযোগী সাহেদুল আলম ওরফে বিপুল গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বন্দি আছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত