দেবকল্যাণ ধর বাপন

৩১ আগস্ট, ২০১৭ ২০:১১

তবু হকারদের দখলেই ফুটপাত!

ফের নগরীর ফুটপাত দখল করে নিয়েছে ভাসমান ব্যবসায়ীরা।নগরীর অনেক ফুটপাত ছাপিয়ে সড়কে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে হকাররা। ফলে দূর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী আর পথচারীরা।

আদালতের নির্দেশে সম্প্রতি সিটি কর্পোরেশন ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও ফের হকাররা জুড়ে বসেছে ফুটপাতে। নগরীর বেশিরভাগ ফুটপাত ও অনেক সড়ক দখল করে হকাররা ব্যবসা চালালেও নিরব সিটি কর্পেোরেশন। ঈদ উপলক্ষ্যে বেড়েছে ফুটপাতে হকারদের উৎপাৎ। ফলে বেড়ে গেছে পথযাত্রীদের দূর্ভোগ ও যানজট।

বারবার হকার উচ্ছেদে সিটি কর্পোরশেনে অভিযান আর অভিযান শেষ হওয়ার পরই পুণরায় ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়া নিয়ে ক্ষুব্দ নগরবাসী। এসব উচ্ছেদ অভিযান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা। তবে এবার নগরবাসীর মনে প্রশ্ন উঠেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) র হকার উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে। মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগিতায় বারবার সিসিক বেদখল হওয়া ফুটপাতে অভিযান চালানো স্বত্বেও কেনো তা প্রতিবারই ফের হকারদের দখলে চলে যায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নগরবাসী। কেবল উচ্ছেদ অভিযান নয়, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে সিসিক ও পুলিশের আন্তরিকতা ও নিয়মিত তদারকি প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

নগরীর শেখঘাটের বাসিন্দা মুন্না মিয়া বলেন, সম্প্রতি প্রায়ই দেখা যায় সিসিক মেয়র পুলিশের সহযোগীতায় হকারদের উচ্ছেদ করতে অভিযান চালাচ্ছেন। অভিযান শেষেই হকাররা ফের ফুটপাত দখল করে নিয়ে চালাচ্ছে নিজ নিজ ব্যবসা। এমন দৃশ্য দেখে ছোট বেলার ‘চোর পুলিশ’ খেলার কথা মনে পড়ে যায়।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সরজমিন ঘুরে দেখা যায় নগরীর চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, বন্দর বাজার, কোর্ট পয়েন্ট, সুরমা মার্কেটসহ নগরীর বিভিন্ন জায়গায় ফুটপাতসহ রাস্তার প্রায় অর্ধেকটা দখলে নিয়েছে হকাররা। এমনকি সিটি কর্পোরেশনের নব নির্মিত ভবনের প্রবেশ দ্বারের দুই পাশও হকারদের দখলে।

এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দেয়ালে ‌'হকার বসা নিষেধ', 'পথচারী চলাচলের জন্য উন্মুক্ত' লেখা সাইনবোর্ড লাগানো থাকলেও এই সাইনবোর্ডের সামনেই ফুটপাত দখল করে নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন হকাররা।

নগরীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব লিপন বলেন, হকারদের কারণে ফুটপাত রেখে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হয়। কিছুদিন আগে সিটি কর্পোরেশন ফুটপাত দখলমুক্ত করলেও মনিটরিংয়ের অভাবে আবার তারা ফুটপাত সহ রাস্তার প্রায় অর্ধেকটা দখলে নিয়েছে। তাই  যানজট তৈরি হচ্ছে। নিয়মিত মনিটরিং না থাকলে উচ্ছেদ করে লাভ হবে না। কারণ এখন উচ্ছেদ করা হলে একটু পরে আবার তারা দখল করে বসবে।

পথচারী দীপালী দাশ বলেন, এগুলো লোকদেখানো উচ্ছেদ। তা না হলে উচ্ছেদ করার পরও হকাররা কি ভাবে পুণরায় ফুটপাত দখল করে বসতে পারে! উচ্ছেদের সাথে এইটাও ব্যবস্থা করতে হবে যাতে পুণরায় তারা আর বসতে না পারে। এতে করে নগরীতে অন্তত একটু নিরাপদে হাঁটা যাবে।

জিন্দাবাজার "সিলেট প্লাজা'র" সামনের রাস্তায় বসে শার্ট বিক্রি করছিলেন একজন হকার। তিনি বলেন, কি আর করবো বলেন। আমরা গরিব মানুষ। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় বসেই ব্যবসা করি। আমাদের নির্দিষ্ট কোন জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়েই রাস্তায় বসে ব্যবসা করতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান নির্বাহী এনামুল হাবিব সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুধু আমাদের দেশে নয় পৃথিবীর সকল উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই ধরণের সমস্যা রয়েছে। তবে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। অভিযানে সহযোগিতা করছে জেলা প্রশাসন। তবে ঈদের কারণে ফুটপাত দখল করে কিছু হকার বসছে। যা ঈদের পর আবার উচ্ছেদ করা ফুটপাত সম্পূর্ণ দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক অভিযান অব্যাহত রেখেছি। এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে এটা নিশ্চিত সিসিক কর্তৃক নগরীর ফুটপাত হকার মুক্ত করা সম্ভব।

ভাসমান হকারদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিসিক ইতিমধ্যে মার্কেট ভাঙ্গার কাজ শুরু করেছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ প্রকল্প আমরা শেষ করে হকারদের পুনর্বাসনের মধ্যে দিয়ে নগরীর ফুটপাত সম্পূর্ণ দখলমুক্ত করতে পারবো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত