মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১৮:০১

মৌলভীবাজারে দশভুজা, শতভুজা ও সহস্রভুজা দুর্গা প্রতিমা

আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব। ঢাক-ঢোল আর কাঁসরের ঘণ্টাধ্বনি বেজে ওঠবে মণ্ডপে মণ্ডপে। সেজে ওঠছে মণ্ডপগুলো। প্রতিমাগুলো এরই মধ্যে পেয়েছে যার যার আদল। । প্রতিমা শিল্পীরা শেষ করেছেন রং আর সাজগোজের কাজ। সবার চোখে এখন উদ্বেগের পাশাপাশি আছে তৃপ্তিও।

এই উৎসবকে রঙিন ও প্রাণবন্ত করতে মৌলভীবাজারের ত্রিনয়নী শিববাড়ি পূজা মণ্ডপ নির্মাণ করেছে ব্যতিক্রমী প্রতিমা। অশুভ শক্তি বিনাশ করতে দুর্গা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছেন। সেই নানা সময়ের নানা রূপ ফুটিয়ে এবার তিন ধরনের প্রতিমা তৈরি করেছে তারা।

মৌলভীবাজারে শহরের সৈয়ারপুর এলাকার ফরেস্ট অফিস রোডের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, ১০০০ হাতসহ প্রতিমা তৈরি সম্পন্ন হয়েছে । এছাড়াও একই স্থানে রয়েছে ১০০ হাত ও ১০ হাতের প্রতিমা। সাথে আছেন আরও অনেক দেব-দেবী। মৌলভীবাজারের প্রতিমা শিল্পীরাই প্রায় দুই মাস সময় ধরে এই মূর্তিগুলো তৈরি করছেন।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, ত্রিনয়নী শিববাড়ি তাদের একদশক পূর্তি উপলক্ষে এ বছর তিন ধরনের প্রতিমা নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে আছে ১০০০ হাত, ১০০ হাত ও ১০ হাত বিশিষ্ট প্রতিমা। এই মূর্তিগুলো দেবীর হাতের পরিচয়ে সহস্রভুজা, শতভুজা ও দশভুজা নামেই পরিচিত হবে। এছাড়াও সত্যযুগ ও ত্রেতা যুগের কাহিনী অবলম্বনে ৮০টি মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। দেবীর আশপাশে স্থাপন করা হয়েছে এই মূর্তিগুলো।

ত্রিনয়নী শিববাড়ি পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক স্বপন চন্দ্র পাল সপু বলেন, ‘ত্রিনয়নীর দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবার এই বিশেষ প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে। অশুভ শক্তি বিনাশের জন্য দুর্গা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপ ধারণ করেন। আমরা তার তিনটি রূপ এখানে ফুটিয়ে তুলছি। প্রতিবারই আমাদের সংঘ থেকে ব্যতিক্রম কিছু করা হয়। বৃহত্তর সিলেটের মধ্যে আমাদেরটাই ব্যতিক্রম। এক হাজার বা একশ হাতের প্রতিমা এই এলাকায় (বৃহত্তর সিলেটে) আর নেই।

এছাড়া এ বছর সারা জেলায় ১০০৪টি পূজামণ্ডপ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে সার্বজনীন ৮২১টি এবং ব্যক্তিগত ১৮৩টি।

এদিকে রাজনগরের পাচগাঁওয়ে প্রতিবারের মতো এবারও লাল দুর্গার মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। এই মূর্তিগুলো আকারে বড় না হলেও লাল রঙের বিশেষ দেবী মূর্তি নির্মাণ করা হয়।

আয়োজকরা জানান, তাদের বিশ্বাস এখানে দেবী স্ব-শরীরে লাল রং ধারণ করে উপস্থিত হয়ে ভক্তদের মনোবাসনা পূর্ণ করবেন। এই বিশ্বাসে প্রতিবারের মতো এবারো নামবে হাজার হাজার পূণ্যার্থীদের ঢল।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ রায় মুন্না বলেন, ‘পূজার সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ। এখন পর্যন্ত পূজা নিয়ে কোথাও কোনো সমস্যা নেই। শুধু জেলার যেসব এলাকায় বন্যা সেখানে মণ্ডপের স্থান ডুবে আছে। এলাকার উঁচু বাড়িতে প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। তারপরও পানির জন্য অনেকের পক্ষেই পূজামণ্ডপে আসা-যাওয়ায় সমস্যা হবে।’

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল বলেন, ‘অন্যান্যবারের মতো নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পূজা উদযাপন কমিটির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত