কামরুল ইসলাম মাহি, জগন্নাথপুর

২৮ ফেব্রুয়ারি , ২০১৮ ১৬:২৯

নির্ধারিত সময়েও শেষ হয়নি বেড়িবাঁধের কাজ, শঙ্কায় কৃষক

নির্ধারিত সময়ে বেড়িবাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় সুনামগঞ্জের সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওরের কৃষকরা শঙ্কিত। একদিকে বাঁধের কাজ অসমাপ্ত থাকা, অপরদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কায় কৃষকদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সম্প্রতি হাওর পরিদর্শন করতে গিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা কৃষকদের তোপের মুখে পড়েন।

নলুয়ার হাওর পাড়ের ভুরাখালী গ্রামের কৃষক আব্দুস সবুর বলেন, আর কয়েকদিন পর ফসল ঘরে তোলার ধুম পড়বে। কিন্তু হাওরের বাঁধগুলোর কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। গত বছর (২০১৭ সাল) শিলাবৃষ্টির কারণে ১২ কেদার জমির সম্পূর্ণ ফসল নষ্ট হয়ে যায়। অনেক কষ্ট করে সংসার চালাতে হচ্ছে। এ বছর যদি ফসল গোলায় না তুলতে পারি তাহলে না খেয়েই হয়তো মরতে হবে।

জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আতাউর রহমান বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় আমরা শঙ্কিত। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার জন্য আহবান জানান তিনি।

এদিকে বেড়িবাঁধের কাজ শেষ করতে প্রতিনিয়ত হাওর পরিদর্শন সহ পিআইসি কমিটিকে তাগিদ দিয়ে আসছেন জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ। তবে নির্ধারিত সময় শেষ হলেও কাজ শেষ না হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওর পোল্ডার-২ এলাকার বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ এখনও চলছে।

এছাড়া উপজেলার আরো বিভিন্ন স্থানে কাজ চললেও এখনো কোথাও শেষ হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। কাজ শেষের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাওরের কৃষকরা।

জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শওকত উসমান মজুমদার বলেন, এ বছর উপজেলার নলুয়া, মইয়া, পিংলা সহ ছোট বড় ১৫টি হাওরের প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিকে বোরো ফসলের চাষাবাদের আওতায় আনা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানান, বেড়িবাঁধের কাজ শেষ করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর (২০১৭ সাল) বোরো ফসল হারিয়ে কৃষকদের বুক ফাটা আর্তনাদে হাওরাঞ্চলের পরিবেশ ছিল কষ্টদায়ক। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বহীনতার কারণে ঘরে সোনার ফসল তুলতে না পারায় কৃষকের আর্তনাদে আকাশ ভারী হয়ে উঠেছিল। এবারও ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনো অনেক স্থানে কাজ শুরুই হয়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত