মাধবপুর প্রতিনিধি

০৫ মার্চ, ২০১৮ ১৬:৪৪

সবজি চাষিদের কান্না শুনবে কে?

সবজির বড় বাজার হচ্ছে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী বাজার। ক্রেতা বিক্রেতা আর আড়তদার–ব্যাপারীদের ভিড় ছিল অন্য দিনের মতোই। কিন্তু ছিল না শুধু কাঙ্ক্ষিত দাম। উল্টো দুদিন আগে মনতলা বাজারে যে টমেটোর পাইকারি দাম ছিল প্রতি কেজি ৪-৫ টাকা, দু দিনের ব্যবধানে সেই টমেটোর দাম ১ টাকায় নেমে এসেছে। সবজির দাম কমে আসায় অনেকটা নিরুপায় হয়ে গেছেন কৃষকরা।

সোমবার (৪ মার্চ) শীতকালীন সবজিতে ছিল বাজার ঠাসা। ভরা মৌসুমে বাজারে রেকর্ড পরিমাণ আমদানি ছিল সবজির। এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত বাজারের সবখানেই ছিল সবজিতে ভরপুর।

দুদিন আগে প্রতি কেজি লাউ ১২-১৪ টাকায় বিক্রি হলেও চৌমুহনী বাজারে প্রতি কেজি লাউ ২-৩ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছিল। এভাবে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ কমেছে বাঁধাকপি, বেগুন, পেঁপে, গাজর, শিম, কাঁচা মরিচসহ সব ধরনের সবজির দাম।

বাজারে শীতকালীন সবজির প্রচুর আমদানি হলেও বিভিন্ন অজুহাতে বেপারী আর আড়তদারেরা গা ছাড়া ভাব দেখিয়ে সস্তায় সবজি কিনছেন। সবজির দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

চৌমুহনী ইউনিয়নের কৃষক আবুল খায়ের বলেন, ৪০ শতক জমিতে টমেটো আবাদ করেছিলাম। মৌসুমের শুরু থেকেই দাম মোটামুটি ছিল। কিন্তু দুই সপ্তাহ যাবত টমেটো বিক্রি করতে এসে মাথায় হাত দিতে হয়। দাম হঠাৎ করে তিনগুণ কমে গেছে।

সোমবার সকালে সরেজমিনে চৌমুহনীর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারজুড়ে শুধু সবজি আর সবজি। কোথাও তিল ধারণের জায়গা নেই। বাজার ছাড়াও সড়কের আশেপাশে সবজির স্তূপ। ক্ষেত থেকে তোলা সবজি নিয়ে ক্রেতার আশায় সকাল থেকে বাজারে বসে আছেন সবজি চাষিরা। আর আড়তদার ও পাইকাররা অনেকটা পানির দামে সবজি কিনছেন। পানির দামে সবজি বিক্রি করে বিষণ্ণ মন নিয়ে বাড়ি ফিরছেন কৃষকেরা।

বাজারে থাকা ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চৌমুহনী পাইকারি বাজারে সোমবার প্রতি মণ টমেটো ৬০-৭০ টাকা, বাঁধা কপি প্রতিটি ৮ থেকে ৭ টাকা, শিম প্রতি মণ ১০০-১২০ টাকা, লাউ প্রতিটি ২-৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাধবপুর উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অর্ধেন্দু দেব অসিত বলেন, কৃষকের হাহাকার দেখে আমরাও কষ্ট পাচ্ছি। সবজির সঠিক মূল্য না পেয়ে কৃষকরা দিশেহারা। অনেক কৃষক তাদের পুঁজিই তুলতে পারবে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত