নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ মে, ২০১৮ ২০:২৭

বজ্রপাতে মৃত্যুহার কমানোর উদ্যোগ নেয়ার দাবিতে সিলেটে মানববন্ধন

অতিসত্বর হাওরে বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে বজ্রনিরোধক দণ্ড অথবা টাওয়ার নির্মাণ, গভীর হাওরে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, হাওরে প্রচুর পরিমাণে তাল গাছ রোপণ, বজ্রপাতে মৃত্যু বাড়ার কারণ ও প্রতিকারে গবেষণা করা ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সাহায্য প্রদানের পরিমাণ ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা এই পাঁচ দফা দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা।

মঙ্গলবার (৮ মে) বিকাল চারটায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে সিলেটে বসবাসরত হাওরাঞ্চলের জনগণসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ যোগ দেন।

মানববন্ধন চলাকালে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কাসমির রেজার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পিযুষ পুরকায়স্থ টিটুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক কমরেড সিকন্দর আলী, বিশিষ্ট সাংবাদিক আল আজাদ, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সিলেট জেলার সভাপতি আব্দুল করিম কিম, ময়মনসিংহ সমিতি সিলেটের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল আলম বাবলু, এডভোকেট আলাউদ্দিন, সুজনের সহসম্পাদক মিজানুর রহমান, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সহসাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুল কাশেম, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আকবর হোসেন প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, বজ্রপাত হাওরে এক নতুন আতংক। বজ্রপাতে মৃত্যু এর আগেও হয়েছে। কিন্তু তা এত বেশি ছিল না। গত এক সপ্তাহেই বজ্রপাতে মারা গেছেন প্রায় ৫০ জন কৃষক। মৃত্যুর এই হারই বলে দিচ্ছে এর তীব্রতা কতটুকু। তাই এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা দরকার। গবেষণা করে এর কারণ ও প্রতিকার খুঁজে বের করতে হবে। একই সাথে বক্তারা বজ্রপাতে নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য প্রদানের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। বক্তারা হাওর এলাকার লোকজনকে বজ্রপাতের সময় সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেন।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, 'মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ও ম্যারিল্যান্ড ইউনিভার্সিটি এক যৌথ গবেষণায় দুই বছর আগেই বলেছিল মার্চ থেকে মে মাসে সারাবিশ্বে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় বাংলাদেশের হাওর অঞ্চলে। বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে তারা হাওরে ১০ লক্ষ তাল গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছিল। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগকেও উৎসাহিত করতে হবে। বজ্রপাতে যারা মারা যাচ্ছে তারা সমাজে পুঁজিপতি নন। তারা দরিদ্র কৃষক। তারা প্রায়ই মাঠে কাজ করতে গিয়ে বৃষ্টিতে ভেজেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে কাছে কোন বড় গাছ না থাকায় কৃষকের উপরে পড়ে। তাদের মৃত্যু হয়। গতবছরও বজ্রপাতে হাওরের বেশ কয়জন মারা যান। তখন এ নিয়ে অনেক আলোচনা হল। এরপর আমরা ভুলে গেলাম। এ বছর আবার যখন হাওরে বজ্রপাতে মারা গেলেন দুর্ভাগা ক'জন আবারো আমরা বলাবলি করছি। ক'দিন পর হয়ত আবার ভুলে যাব। এই মৃত্যুর মিছিল থামাতে আমাদের কি কিছুই করার নেই? অবশ্যই আছে। এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।'

আপনার মন্তব্য

আলোচিত