কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

১৪ মে, ২০১৮ ২২:০০

কমলগঞ্জে ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ; আহত ১৪

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতিসহ উভয় পক্ষে ১৪ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার (১৪ মে) বেলা দেড়টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার বেলা ১ টার দিকে কমলগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ গেইটে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ছাত্রলীগের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাকের আলী সজিব গ্রুপের মুন্না, নাইম, নাহিদসহ আরও কয়েকজনের সাথে সভাপতি রাহাত ইমতিয়াজ রিপুল গ্রুপের রাফি’ টিপু ও সায়েমের কথাকাটির এক পর্যায় সংঘর্ষ বাঁধে। মুহুর্তেই সংঘর্ষ পুরো কলেজ ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষ লাঠি ও চাকু নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় বলে জানা যায়।

বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাহাত ইমতিয়াজ রিপুল  এবং সাধারণ সম্পাদক সাকের আলী সজিব উভয়েই যার যার সহযোগীদের নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। তখন উভয় গ্রুপের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। খরব পেয়ে কমলগঞ্জ থানার এস আই চম্পক ধাম এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কলেজ ক্যাম্পাসে আসলেও পুলিশের উপস্থিতিতে সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারন করে।

সংঘর্ষে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রুপের কমলগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল হাকিম, রাফি, সাইফুর রহমান টিপু, সোহাগ, নয়ন তানভীর, সামাদ, জয় ও সাফি আহত হন। অপর দিকে উপজেলা ছাত্রলীগ সম্পাদক গ্রুপের সাব্বির হোসেন মুন্না, নাইম, নাহিদ, কামরুল ও রফি আহত হন।

সভাপতি গ্রুপের আহত কর্মী রাফিকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সম্পাদক গ্রুপের আহত সাব্বির হোসেন মুন্নার বড় ভাই ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন পান্না ও তার সহযোগীরা হাসপাতালে গিয়ে রাফি ও হাকিমের উপর হামলা করে বলে অভিযোগ উঠে। এতে হাকিম মারাত্মক আহত হলে তাকে এবং রাফিকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া সাব্বির হোসেন মুন্নাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ (সিওমেজ) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অন্যান্য আহতদের কমলগঞ্জ ও মৌলভীবাজার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার পর পর রিপুল গ্রুপ কমলগঞ্জ উপজেলা চৌমুহনায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে দায়ীদের শাস্তি দাবী করে। এবং সজিব গ্রুপ ভানুগাছ বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে সভাপতি রিপুল ও তার সহযোগীদের দায়ী করে দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেছে।

এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান মিঞা বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ন অপ্রত্যাশিত। গভর্নিং বডির সভায় আলোচনা করে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে পুলিশকে অবগত করা হলেও তারা আসতে দেরী করে। যদি পুলিশ সময়মতো আসতো তাহলে বিষয়টি বড় হতো না।

উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাহাত ইমতিয়াজ রিপুল বলেন, সাধারণ সম্পাদক সাকের আলী সজিব ও জাকির হোসেন পান্না পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক কলেজের পরিবেশ অশান্ত করার জন্য হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।

উপজেলা ছাত্রলীগ সম্পাদক সাকের আলী সজিব বলেন, ১৩ মে কলেজে ছাত্রদলের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। ১৪ মে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাহাত ইমতিয়াজ রিপুল ছাত্রদলের কয়সর, জুলিসহ অন্যান্যদের সেল্টার দিয়ে ছাত্রলীগের মুন্না, নাহিদ, নাইমদের উপর হামলা করেছে।

এ ঘটনায় নিরাপত্তার অভাবে শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করতে না চাইলে কলেজে বিকেলের পরীক্ষা বাতিল করা হয়।

কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মোকতাদির হোসেন পিপিএম বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত। পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভানুগাছ বাজার ও উপজেলা চৌমুহনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উভয় গ্রুপ অবস্থান নিয়ে মিছিল পাল্টা মিছিল করছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত