গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি

০৫ আগস্ট, ২০১৮ ০১:২৭

গোলাপগঞ্জে শ্রমিক ধর্মঘট ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে জনদূর্ভোগ চরমে

সিলেটের গোলাপগঞ্জে টানা দু’দিনের অঘোষিত পরিবহন শ্রমিক ধর্মঘট ও ঢাকায় বাস চাপায় হত্যাকারীদের বিচার এবং নিরাপদ সড়কের দাবীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে চরম দূর্ভোগ মধ্যে পড়েছেন যাত্রীরা। পরিবহন শ্রমিকরা গত শুক্রবার (৩আগস্ট) ও শনিবার (৪ আগস্ট) সকাল থেকেই সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কসহ আঞ্চলিক সব সড়কে অবস্থান করে পিকেটিং চালিয়ে যায়।

এছাড়া তারা গোলাপগঞ্জ মডেল থানা সংলগ্ন স্থানে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, রাস্তার মাঝ বরাবের ট্রাক দিয়ে বাধা ও বড় বড় গাছের খন্ড ফেলে রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করেন। তাদের ধর্মঘটের ফলে পূর্ব সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যাত্রী সাধারণ ও রোগীরাও আটকা পড়েন। এতে করে যাত্রী সাধারণ ও আগতরা চরম দূর্ভোগের মধ্যে পড়েন।

শুক্রবার সকাল থেকে গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীতে অবস্থান নেয় সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন ও মাইক্রোবাস ইউনিয়নের শ্রমিকরা। তাদের অবস্থান বিকাল ৫টায় পর্যন্ত থাকে। এসময় শ্রমিক সব ধরনের যানবাহন আটকে দিলে রাস্তার উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দিনভর পিকেটিং শেষে বিকেল ৫টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এদিকে শনিবার সকাল থেকে ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্টভ্যান শ্রমিকরা উপজেলা সবক’টি রাস্তায় সকাল থেকেই অবস্থান নিয়ে পিকেটিং শুরু করেন। শ্রমিক সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের গোলাপগঞ্জ কদমতলী পয়েন্ট, হেতিমগঞ্জ বাজারে, ঢাকাদক্ষিণ ভায়া ভাদেশ্বর রোডের উপজেলা সংলগ্ন, বিয়ানীবাজার চন্দরপুর সনড়কের চন্দরপুর বাজারে, ঢাকাদক্ষিণ ও রাণাপিং চৌঘরী বাজারে পিকেটিং করেন। তবে এ নিয়ে পুলিশের ভূমিকা ছিল নিরব। শ্রমিক ধর্মঘটের নামে লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, ট্রাক দিয়ে বাধা প্রদান বা গাছের খন্ড ফেলে ব্যরিকেড দিলেও পুলিশের কোন পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি। এদিকে সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার গোলাপগঞ্জ এমসি একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ, আতহারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেভজের শিক্ষার্থীরা ঢাকায় বাস চাপায় হত্যাকারীদের বিচার এবং নিরাপদ সড়কের দাবীতে ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে। তারা পৃথকভাবে এমসি একাডেমী ও কলেজের সামনে এবং হেতিমগঞ্জ বাজারে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন গাড়ি আটকিয়ে গাড়ির লাইসেন্স চেক করে।

যেসব গাড়ির কাগজপত্র ও চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, তাদের গাড়ি আটকে দেয় শিক্ষার্থী। বিপরীতে যাদের কাছে দু’টি কাগজই পাওয়া গেছে, তাদের গাড়ি ছেড়ে দেয় তারা। এসময় তারা 'যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ’, ‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা কেন?’, ‘স্বাধীনতা তুমি বাসের চাপায় পিষ্টে যাওয়া তরতাজা দুটি লাশ, স্বাধীনতা তুমি দুটি ফুল ঝরে পড়ায় মালির করা উচ্ছ্বাস’, স্লোগান সংবলিত ভহাতে লেখা ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে মিছিল দিতে থাকে। পরে গোলাপগঞ্জ এমসি একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মনসুর আহমদ চৌধুরী শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করলে প্রায় ২ ঘন্টা রাস্তা অবরোধের পর এমসি একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয় এবং আতহারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা হেতিমগঞ্জে দুপুর ২ টা থেকে প্রায় ২ ঘন্টা বিক্ষোভ করে পরে তারা চলে যায়।

এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি একেএম ফজলুল হক শিবলী জানান, শিক্ষার্থী ও স্কুল কালেজের প্রধান শিক্ষদের অনেক অনুরোধের পর শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচী প্রত্যাহার করে। কোন ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়গুলোতে তৎপর ছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত