বানিয়াচং প্রতিনিধি

২৯ নভেম্বর, ২০১৮ ১৭:৫৫

বানিয়াচংয়ে ছুরিকাঘাতে কলেজ ছাত্র নিহত

বানিয়াচংয়ে ইমারত নামের একটি যুব সংঘের টাকার হিসাব-নিকাশ নিয়ে দ্বন্ধের জেরে সায়েম আহমেদ নামে (২১) এক কলেজ ছাত্রকে ছুরিকাঘাতে জখম করেছে ওই সমিতির অপর সদস্য নজরুল আলী। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার রাত দুইটার দিকে সায়েম আহমেদ মৃত্যুবরণ করে। এ ঘটনায় আহত হন আরো দুইজন।

নিহত সায়েম বানিয়াচং সদরের ১নং উত্তর-পূর্ব ইউনিয়নের জামালপুর মহল্লার রমুজ আলীর পুত্র। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে তার বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরদিন পুলিশ সন্দেহমুলক ভাবে দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। নিহত সায়েম আহমেদ স্থানীয় জনাব আলী সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র।

নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, প্রায় তিন মাসে পূর্বে ইমারত নামের একটি যুব সংঘের টাকার হিসাব-নিকাশ নিয়ে নিহত সায়েম আহমেদের সাথে সমিতির অপর সদস্য নজরুল আলীর কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাদেও মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নজরুল কয়েকদিন পর সায়েম আহমেদ ও তার বাবা রমুজ আলীসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। এই মামলায় কোর্ট থেকে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয় সায়েমের বিরুদ্ধে। কয়েকদিন পর সায়েম আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আদালত তাকে জামিন দেন। উক্ত জামিনের রি-কল তারা থানা জমা দেননি। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর বাড়ির পাশে হাটাহাটি করছিল সায়েম আহমদ। এমন সময় বানিয়াচং থানা পুলিশের একটি দল সায়েমকে আটক করে। পরে সায়েমের পিতা রমুজ আলী পুলিশের কাছে সায়েমকে আটকের বিষয়ে জানতে চান। পুলিশ সদস্যরা রমুজ আলীকে জানায় সায়েমের বিরুদ্ধে একটি মামলায় ওয়ারেন্ট রয়েছে তাই তাকে আটক করা হয়েছে। তখন রমুজ মিয়া ওই মামলায় সায়েম জামিনে রয়েছে বলে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ জামিনের কাগজ দেখিয়ে তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে বলে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। রাত ৮টার দিকে আদালতের জামিনের রি-কল নিয়ে থানায় গেলে সায়েমকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

বাড়িতে আসার পর সায়েম তার পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে বই আনার জন্য যায়। পুলিশ সায়েমকে ছেড়ে দিয়েছে এ খবর নজরুল আলী জানতে পেরে চিৎকার চেঁচামেচি করে সায়েমকে গালিগালাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে নজরুল ধারালো ছুরি নিয়ে সায়েমকে ধাওয়া করে ধরে উপর্যুপরি বুকে পিঠে আঘাত করতে থাকে। এ ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা কামরুল ইসলাম ও উজ্জ্বল নামের দুই যুবক গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের চিৎকার শুনে আশেপাশের মানুষ এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দুইটার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সায়েম আহমেদ। আহত দুইজন সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ বিষয়ে বানিয়াচং থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল কাইয়ুম সায়েম আহমেদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দুইজন আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত