হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

০১ মার্চ, ২০১৯ ০০:৩৪

কাজ শেষেও চালু হচ্ছে না ট্রমা সেন্টার, সেবাবঞ্চিত দুর্ঘটনাকবলিতরা

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের জরুরী সেবা দিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে হবিগঞ্জের বাহুবলে নির্মিত হয়েছিলো ট্রমা সেন্টার। তবে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার চার বছর পরও চালু হচ্ছে না এই সেন্টারটি।

সরকারের দুই বিভাগের ঠেলাঠেলাতে অচল অবস্থায় পড়ে আছে ‘ট্রমা সেন্টার’। ৪ বছর ধরে স্থানীয় গণপূর্ত ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে এ ঠেলাঠেলির কারণে এই সেন্টারের ভাগ্য এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কাজ শেষেও চালু না হওয়ায় অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে ট্রমা সেন্টারের কোটি টাকার সরকারী সম্পদ।

এদিকে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। ট্রমা সেন্টারটি চালু না হওয়ায় জরুরী স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দূর্ঘটনাকবলিত লোকজন।    

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১০ সালে ‘ফিজিক্যাল ডেভলাপমেন্ট প্রজেক্ট’ নামে সরকার দেশের ৬টি মহাসড়কের পাশে ১০ শয্যার ট্রমা সেন্টার নির্মানের প্রকল্প গ্রহণ করে। মহাসড়কে দূর্ঘটনায় হাত-পা ভাঙ্গা রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে এগুলো নির্মিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় একটি ৩ তলা ভবন নির্মান করা হয়। এতে ব্যয় হয় প্রায় ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। পরে সরবরাহ করা হয় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র। কিন্তু ২০১৪ সালে এর নির্মান কাজ শেষ হলেও দীর্ঘ ৪ বছর ধরে অজ্ঞাত কারণে ভবনটি হস্তান্তর হয়নি স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে। ফলে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত রোগীদের পুর্বের মতই বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে ঢাকা অথবা সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এতে ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে।  

এ ব্যাপারে বাহুবল উপজেলার ফদ্রখলা গ্রামের ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া জানান, ট্রমা সেন্টারটি চালু হলে আমরা সহজেই উন্নত চিকিৎসা নিতে পারতাম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তাদের অবহেলায় আমরা সেটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। পাশাপাশি অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে কোটি-কোটি টাকার সরকারী সম্পদ।

স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল মজিদ শেখ জানান, অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে ট্রমা সেন্টারের ভাগ্য। কিছু দায়িত্বহীন ব্যাক্তির উদাসীনতার কারনে ম্লান হয়ে যাচ্ছে সরকারের একটি মহতি উদ্যোগ। আমরা দ্রুত এর প্রতিকার চাই।    

এ ব্যাপারে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং সিভিল সার্জন। দু’জনই দায় চাপাচ্ছেন একে অন্যের উপর।  

হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ ভবনটি গ্রহণ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তারা অফিসিয়ালি চাইলে এখনই হস্তান্তর করতে প্রস্তুত আছি।

তবে তার বিপরীত বক্তব্য দিয়েছেন হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ সুচিন্ত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি কি তালা ভেঙ্গে ভবনে ঢুকব। তাদের জঠিলতার কারনে তারা (গণপূর্ত) ভবনটি হস্তান্তর করতে পারছে না। আমরা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত’।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত