বানিয়াচং প্রতিনিধি

১৩ মে, ২০১৯ ১৫:৩৫

শতবর্ষী বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট, ব্যাহত পাঠদান

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকটের কারণে একমাত্র শতবর্ষী এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে চরমভাবে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এই বিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম।

১৮৯৬ সালে বিদ্যালয়টি লোকনাথ রমনবিহারী নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এটি এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় নামে পরিচিত।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানের এই বিদ্যালয়ে মোট ছাত্র সংখ্যা ৫৫০ জন। শিক্ষার্থীদের পাঠদানে প্রধান শিক্ষকসহ মাত্র ৭ জন শিক্ষক রয়েছেন। সহকারী শিক্ষকের ২৫ জনের পদে রয়েছেন মাত্র ছয়জন। তারাই চালাচ্ছেন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান।

এমএলএসএস পদে ৬ জনের মধ্যে আছে মাত্র একজন। পাশাপাশি এই বিদ্যালয়ে শূন্য রয়েছে অফিস সহকারী, নৈশপ্রহরীর পদও।

গণিত, রসায়ন, ভূগোল, ইংরেজি, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, কম্পিউটার, চারু ও কারুকলা বিষয়ে শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ইংরেজিতে চার শিক্ষক থাকার কথা। সেখানে এই বিষয়ে একজন শিক্ষকও নেই। বাংলায় চারজনের মধ্যে আছেন মাত্র একজন। গণিতে তিনজনের মধ্যে আছেন মাত্র একজন শিক্ষক।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাওছার শোকরানা জানান, এই বিদ্যালয়সহ অন্য আরেকটি সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি জানান।

বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষক সংকট থাকার পরও অনেক শিক্ষক নিয়মিত ক্লাস নেন না। এতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রেখাছ বলেন, বিদ্যালয়টিতে প্রতি বছরই শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু পাঠদানের জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

তাই দ্রুত সম্ভব এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট দূরীকরণে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) জাকির হোসেইন শিক্ষক সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী প্যাটার্ন অনুযায়ী এই বিদ্যালয়ে ২৫ জন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে ৬ জন শিক্ষক দিয়ে ৫৫০ জন শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। এই বিদ্যালয়ে দূরের কোন শিক্ষক বদলি হয়ে আসতে চান না। আবার কেউ আসলেও কয়েক মাস থেকে অন্যত্র বদলী হয়ে চলে যান। অনেক সময় শিক্ষকদেরই দাপ্তরিক কাজ করতে হয়।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরও জানান, প্রতি মাসেই শিক্ষকদের শূন্য পদের তালিকা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। কেন শূন্য পদগুলোতে সময়মতো শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ করা হচ্ছে না তা আমার বোধগম্য নয়। সুতরাং শিক্ষক সংকট নিরসনে কোনো প্রকার অবহেলা বা কালক্ষেপণ মোটেই কাম্য নয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত