সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ জুন, ২০১৯ ১৭:৫৮

কাউন্সিল আজাদ অনুসারীদের বিরুদ্ধে জায়গা দখল চেষ্টার অভিযোগ

সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় আদালতে মামলা চলমান একটি জায়গা জল দলিলের মাধ্যমে দখলের চেষ্টা চালিয়েছে একটি পক্ষ। এমন অভিযোগ করে রবিবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন জায়গার মালিক মৃত ফিরোজ খানের পুত্রবধু জোহেলা বেগম রুমি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন- শাহী ঈদগাহে উনার শ্বশুর মৃত ফিরোজ খানের নামে সেটেলমেন্ট জরিপ অনুযায়ী ১০১৬৭, ১০১৬১, ১০১৬৫, ১০১৬৬, ১০১৬৯, ১০১৮০, ১০১৬৮, ১০১৬৩, ১০১৬৪ সহ ১৯টি দাগে বিভিন্ন খতিয়ানে ১.১৯২৫ একর সম্পত্তি রয়েছে। আদালতে সমুদয় কাগজপত্র জমা প্রদান করা আছে এবং বর্তমানে এই জায়গার মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।
কিন্তু এ মামলার একজন বিবাদী সুয়েব নবী ২০১৫ সাল থেকে জাল দলিলের মাধ্যমে জায়গাটি দখলে নেয়ার চেষ্টা করছেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৯ মে বিকালে শতাধিক লোকজন নিয়ে আমার শ্বশুরের ক্রয়সূত্রে মালিকানাধীন ফিরোজ ম্যানশনের ১২টি দোকান কোঠা ও পিছনের বসতঘর ভাঙচুর করে। এসময় ট্রাকযোগে মার্কেটে থাকা সিসি ক্যামেরা, মনিটর এবং কয়েকটি দোকানের মালামাল ও দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায় তারা। এসময় ১২টি দোকানের ব্যবসায়ীদের দোকান থেকে বের করে দিয়ে নিজেদের সাথে আনা তালা দিয়ে ১২টি দোকান তালাবদ্ধ করে চলে যায়।

ওই দিন রাতে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে আমরা সিলেট কতোয়ালী থানায় গেলে কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ ঘটনাস্থলে এসে আমাদের ভাড়াটিয়া ১২ টি দোকান মালিকদের সাথে নিয়ে মিটিং করছেন। পরে আমরা এসে জানতে পারি মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী মাস থেকে দোকানের ভাড়া আমাদেরকে না দিয়ে প্রতিপক্ষ সোয়েব নবীর কাছে দেয়া হবে। এতে আমরা আরো বেশি হতাশা এবং আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ি। আমাদেরকে বাদ দিয়ে কাউন্সিলর আজাদের এমন সিদ্ধান্ত দেয়া অমানবিক।

এরআগে ২৯ মে দোকান ও বাসায় হামলাকারীরা কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়।

হামলাকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো টিলাগড়ের বাবলা চৌধুরী, ছয়েফ আহমদ, আবির, শাহরিয়ার, সিদ্দীক, ফারুক ও অপু। এদের সাথে ছিলো সুয়েব নবী গং। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

এই সিদ্ধান্তের একদিন পর ৩০ মে বৃহস্পতিবার বিকেলে সুয়েব নবীর আরেক সহযোগী শাহী ঈদগাহস্থ ন্যাশনাল মেগা সপের মালিক গিয়াস উদ্দিনের কাছ থেকে চাবি এনে স্থানীয়দের মাধ্যমে মার্কেটের ১২টি দোকান কোঠা খুলে দেওয়া হয়। তবে, সকল দোকানদেরকে শুধুমাত্র ঈদ পর্যন্ত ব্যবসা করার সুযোগ প্রদানের নিমিত্তে দোকানগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং মাস শেষে ১২টি দোকানের ভাড়ার টাকা মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুয়েব নবীর কাছে প্রদানের নির্দেশ প্রদান করা হয়। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করা হলে ওসি উভয়পক্ষকে থানায় হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু সুয়েবনবী পক্ষের কোনো লোকজন সেখানে উপস্থিত হননি।

জোহেলা বেগম রুমি বলেন- ১৯৬৬ সাল থেকে আমার শ্বশুরের মৃত্যু পরবর্তী ধারাবাহিকভাবে এই বাড়িটিতে শ্বশুরের ৬ ছেলে ও ৮ মেয়ে তাদের পরিবারসহ বসবাস করে আসছি। জায়গাটি দখলে নিতে সুয়েব নবী দীর্ঘদিন ধরে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ঘটনার পর ভুমিখেকো ওই চক্রটি পালাক্রমে আমাদের ফিরোজ ম্যানশনের চারপাশে টহল দিচ্ছে। এমনকি রাত জেগেও ওই চক্রটি আমাদের পাশ দিয়ে দাপটের সাথে চলাফেরা করছে। এতে করে আমার স্বামী, দেবর ও ননদের স্বামীরা নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেন না। এর ফলে আমাদের বিশাল পরিবার আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতির শিকার হচ্ছি।

এছাড়া বর্তমানে এই যায়গা নিয়ে মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে সুয়েব নবী ও তাঁর আমমোক্তার সৈয়দ আশরাফ আহমদ সুমন তাদের লোকজন দিয়ে আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিভিন্ন ভাবে হুমকী প্রদান করে আসছে।  এ অবস্থায় আমার ছোটো ননদের স্বামী আরিফ আহমদ শনিবার (১ জুন) সিলেট কোতয়ালী মডেল থানায় পরিবারের সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন (ডায়েরি নং-১৯১২)।

এ ঘটনায় সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মোহিতের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত