সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১৭ জুন, ২০১৯ ১৪:৪৩

ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা: সুনামগঞ্জে দুই ছেলেসহ বাবার যাবজ্জীবন

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শিক্ষার্থীর রুবেল পুরকায়স্থ হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তরা সর্ম্পকে বাবা ও ছেলে। কারাদন্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ২ মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামের মৃত জোয়াহের আলীর পুত্র মীর্জা হাছন আলী ও তাঁর দুই পুত্র নোমান মিয়া ও কালা মিয়া।

এছাড়া এই মামলায় মীর্জা মশ্রব আলী, নাছির উদ্দিন খান, শায়েস্তা মিয়া ও বাবুল মিয়া নামে ৪ জনকে খালাস প্রদান করেন আদালত। সোমবার সকাল ১১ টায় এই রায় প্রদান করেন সুনামগঞ্জের দায়রা ও জজ আদালতের অতিরিক্ত দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন।

মামলা সুত্রে জানা যায়- ২০০০ সালের ২০ আগস্ট রাতে তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামের রনজিৎ পুরকায়স্থের জ্যেষ্ঠ পুত্র রুবেল পুরকায়স্থকে পড়ার টেবিল থেকে কাজের কথা বলে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায় প্রতিবেশি মীর্জা হাছন আলীর ছেলে নোমান মিয়া। মধ্যরাত হওয়ার পরও ছেলে না আসায় ঘুমিয়ে পড়ে রনজিৎ ও তাঁর স্ত্রী। রাত ২ টায় বাহিরে চোর চোর চিৎকার শুনে রনজিৎ ও স্ত্রী উষারাণী এগিয়ে গেলে তখন প্রতিবেশি হাছন আলী এবং তাঁর দুই পুত্র নোমান মিয়া ও কালা মিয়া চোর অপবাদ দিয়ে ছেলে রুবেলকে মারধর করছেন। এসময় রনজিৎ ও স্ত্রী উষারাণী ছেলে রুবেলের রক্তাক্ত দেহ পুকুর পারে পড়ে থাকতে দেখেন।

গুরুতর আহত রুবেল তাঁর মা বাবাসহ স্বাক্ষীগণের কাছে বলেন, চোর অপবাদ দিয়ে মীর্জা হাছন আলী এবং তাঁর দুই পুত্র নোমান মিয়া ও কালা মিয়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করেছে তাকে। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে রুবেলকে তাহিরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় পরদিন মীর্জা হাছন আলী এবং তাঁর দুই পুত্র নোমান মিয়া ও কালা মিয়াসহ ৭ জনকে আসামি করে নিহত রুবেলের পিতা রনজিৎ বাদি হয়ে তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মীর্জা হাছন আলী ও তাঁর দুই পুত্র নোমান মিয়া ও কালা মিয়ার বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করে তাহিরপুর থানা পুলিশ।

স্বাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ ও শুনানী শেষে সোমবার দন্ডাদেশ প্রদান করেন বিচারক।

এসময় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী এডিশনাল পি.পি সোহেল আহমদ সইল মিয়া, বাদী পক্ষের আইনজীবী রবিউল লেইস ও আসামী পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জামিনুল হক উপস্থিত ছিলেন।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত