কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

২৯ জুন, ২০১৯ ২০:০০

তাঁতের কাজে স্বাবলম্বী কমলগঞ্জের মণিপুরী মুসলিম নারীরা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে মণিপুরী সম্প্রদায়ের মুসলিম নারীরা তাঁতের কাজ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সারা উপজেলায় প্রায় ২৫০ জন মুসলিম মণিপুরী নারী তাঁতের কাজ করছেন। আগে মণিপুরীদের মধ্যে বিষ্ণুপ্রিয়া ও মৈতৈরা এই কাজ করতেন। তবে বর্তমানে নানা রঙ্গের সুতা দিয়ে ফুল ফুটিয়ে তুলা তাঁতের কাপড়ের দেশে ও বিদেশে ব্যাপক চাহিদা থাকায় মণিপুরী মুসলিম নারীরা আগ্রহী হয়েছেন এই কাজে।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌর এলাকার দক্ষিণ কুমড়াকাপন গ্রামের মণিপুরি (মুসলিম) পাড়ার তেমনি এক মহিলা আমেরজান বেগম। স্বামী আইন উদ্দিন পেশায় একজন গাড়ি চালক। স্বামী ও ৩ ছেলেকে নিয়ে তার সংসার। ছেলেরা লেখাপড়া করছে। বড় ছেলে এইচএসসিতে, দ্বিতীয় ছেলে ৮ম শ্রেণিতে আর ছোট ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে। কিন্তু  অর্থ সংকটের কারণে মাঝে মাঝে তিনি হতাশ হতেন। চিন্তা করতেন কিভাবে সংসার চালাবেন ও ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ। এমতাবস্থায় জানতে পারেন মুসলিম এইড নামে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার সুদ মুক্ত ঋণ বিতরণের কথা।

আমেরজান বেগম বলেন, তাঁতের কাজ করে সুন্দরভাবে সংসার চলছে। নতুন করে ঘর তৈরি করেছি। এখন আগের তুলনায় আমি অনেক সুখি। বর্তমানে আমার ব্যবসার অবস্থা ভাল।

তিনি বলেন, অনেক অভাবে ছিল আমার পরিবার। সংসার চলতো কষ্ট হতো। পরে বেগম মুসলিম এইড দক্ষিণ কুমড়াকাপন গ্রামের মণিপুরী সমিতিতে ভর্তি হই। প্রথমে ১০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে তা দিয়ে একটি তাঁত কিনি। স্বামী-স্ত্রী মিলে তাঁতের কাজের পাশাপাশি কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। প্রতিমাসে আমার আয় হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এমনভাবে ৮ বার ঋণ নিয়ে ব্যবসার পাশাপাশি কৃষি কাজও শুরু করি। বর্তমানে আমার ৫ কেয়ার জমি আছে। , নিজস্ব পাকা বাড়ী আছে। এই টাকা দিয়েই স্বামীকে বিদেশে পাঠিয়েছি।

আমেরজান বেগম, মুসলিম এইডের অবদানের কথা আমি কোনোদিন ভুলবো না। পরবর্তীতে বড় ধরনের অর্থ সহায়তা পেলে আরো ভাল কিছু করতে পারবো আমি ।
আমেরজান বেগম জানান, ক্ষুদ্র ঋণের টাকা  দিয়ে তাঁতের কাজ করে সুন্দরভাবে সংসার চলছে। নতুন করে ঘর তৈরি করেছি। এখন আগের তুলনায় আমি অনেক সুখি। বর্তমানে তার ব্যবসার অবস্থা ভাল। তার এগিয়ে যাওয়ার পেছনে মুসলিম এইডের অবদানের কথা তারা স্বীকার করে বলেন,


মুসলিম এইড কমলগঞ্জ শাখার শাখা ব্যবস্থাপক মো. আর্শ্বাদুন্নবী বলেন, মুসলিম এইড ২০০৫ সাল থেকে কমলগঞ্জে ডিপ টিউববয়েল ও মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রাম এর কাজ করে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে অত্র এলাকার প্রায় তিন হাজার পরিবার বিভিন্ন প্রকার সেবা গ্রহণ করছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত