তাহিরপুর প্রতিনিধি

২৮ অক্টোবর, ২০১৯ ১৯:০৩

চাচাকে বাবা দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ওঠানোর অভিযোগ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে মুক্তিযোদ্ধা মৃত নুর মিয়ার মেয়ে পরিচয় দিয়ে দীর্ঘ চার বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা ওঠাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তারই ভাতিজী হালিমা আক্তারের বিরুদ্ধে। হালিমা মুক্তিযোদ্ধা নুর মিয়ার ছোট ভাই আবুল হোসেনের দ্বিতীয় মেয়ে। আর এই অভিযোগ তুলেছেন মৃত মুক্তিযোদ্ধার বড় ভাই মিয়া হোসেন।

হালিমা আক্তারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। একইসাথে তদন্ত সাপেক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা বাতিল করা ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের মৃত ওলি মামুদের ছেলে নুর হোসেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি তাহিরপুর উপজেলার চিসকা গ্রামের মনসুর আলী মেয়ে সাফিয়া বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের দেড় মাস পর নিঃসন্তান অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা নূর মিয়া মারা যান। পরবর্তীতে সাফিয়া বেগম দেবর (নুর মিয়ার ছোট ভাই) আবুল হোসেনকে বিয়ে করেন।

এই সংসারে ৮ জন ছেলে মেয়ে রয়েছে। তার মধ্যে ২য় মেয়ে হালিমা আক্তারকে নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যাওয়া নূর মিয়ার সন্তান পরিচয় দিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করছে আবুল হোসেন। এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা উত্তোলনকারী হালিমা আক্তারের জাতীয় পরিচয়পত্রে পিতার নাম রয়েছে আবুল হোসেন। এমনকি হালিমার বিয়ের কাবিননামায়ও পিতার নামের স্থলে আবুল হোসেন লেখা।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আবুল হোসেনের সাথে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

তবে অভিযোগকারী মিয়া হোসেন বলেন, ‘আমি অভিযোগ দিয়েছি যাতে করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার পরিচয়দানকারীরা মুক্তিযোদ্ধার ভাতা না পায়। কারণ আমার ভাই মারা গেছেন বিয়ের একমাস পর নিঃসন্তান অবস্থায়। এরপর তার বউ আমার ছোট ভাইকে বিয়ে করে। তাহলে কীভাবে আবুলের ২য় মেয়ে হালিমা আমার মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়ের সন্তান হয়। এই সন্তান আবুল হোসেনের সে ভুল তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা তুলে খাচ্ছে। এর বিচার হওয়া দরকার।’

এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা সমাজ সেবা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিবাদী ও বাদী দুই পক্ষকেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আসার জন্য দশ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্ট করা হবে।’

তাহিরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই বিষয়ে আগামী ২ নভেম্বর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে হাজির হবার জন্য দু’পক্ষকেই বলা হয়েছে। এরপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত