হৃদয় দাশ শুভ, শ্রীমঙ্গল

২৯ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:১০

রাস্তায় সংস্কারকাজে ধীরগতি, ভোগান্তি চরমে

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-শমসেরনগর সড়কের সংস্কারকাজের জন্য রাস্তাটি খোঁড়া হয়েছিল গত জুলাই মাসে কিন্তু তিনমাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও নেই কোন দৃশ্যমান উন্নয়ন। পুনর্নির্মাণের জন্য খোঁড়া এই সড়কটির কাজ কখনও চলছে ধীরগতিতে কখনওবা আবার বন্ধ থাকছে বৈরী আবহাওয়ার কারণে। ফলে খোঁড়া রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে ছোটবড় অসংখ্য খানাখন্দ ও গর্ত। বৃষ্টিতে এইসব গর্তে পানি জমে সৃষ্টি হয় কাঁদার।

আর সড়কের এসব ছোট ছোট গর্তে পরে মাঝারী যানবাহনগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনা কবলিত হচ্ছে। শ্রীমঙ্গল-শমশেরনগর সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় মানুষ ও পর্যটকদের।

স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান উদ্দিন সিলেটটুডেকে বলেন,প্রায় প্রতিদিনই এই সড়কে মোটরসাইকেল নিয়ে যাই,প্রতিদিন ই খুব কষ্ট করে এই রাস্তায় চলতে হয় ৷ একদিকে বড় বড় গর্তে বৃষ্টির পানি জমে থাকে অন্যদিকে রাস্তার পাথরে মোটরসাইকেলের চাকা পিছলে যায়,খুব সাবধানে না চালালে এই সড়কে দুর্ঘটনা অনিবার্য।

এই সড়ক শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম প্রতিদিন এই সড়কে যাত্রীবাহী বাস সহ সিএনজি অটোরিকশা এবং নানান ধরনের মাঝারী যান চলাচল করে ৷ খোঁড়া রাস্তায় ভোগান্তি নিয়েই চলতে হচ্ছে এ রাস্তায় চলাচলকারী সবাইকে।

তাছাড়াও পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রবেশের ও এটিই একমাত্র সড়ক তাই দেশ বিদেশ থেকে আসা পর্যটকরা ফিরে যাচ্ছেন বিরক্তি নিয়ে ৷
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক অদিতি হোসেন সিলেটটুডে কে বলেন,একটা পর্যটনের শহরের পর্যটন স্পটগুলোতে যাওয়ার প্রধান রাস্তা এরকম থাকবে এটা ভাবাই যায় না ৷ ঢাকা থেকে আসতে যত কষ্ট হয়েছে তার তিনগুণ কষ্ট এই রাস্তায় চলতে হয়।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের শমশেরনগর-শ্রীমঙ্গল সড়কটির পুনর্নির্মাণকাজ এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়। কাজ শেষ করার সময় দেড় বছর। কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন, মইন উদ্দিন কনস্ট্রাকশন ও জামিল ইকবাল কনস্ট্রাকশন।

সরেজমিনে এই সড়ক একাধিকবার ঘুরে দেখা যায়, শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কের ফিনলে চা বোর্ডের সামনে থেকে শমসেরনগর পর্যন্ত সড়ক পুনর্নির্মাণ করার জন্য পুরনো পিচ ঢালাই সড়ক খুঁড়ে রাখা হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ার কারণে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে আছে। পানির কারণে কোথায় গর্ত আর কোথায় সমতল, তা বুঝতে পারছেন না চালকেরা। ফলে ঝুঁকি নিয়েই পাহাড়ি এ পথে চলছে যানবাহন। প্রায়ই সড়কের পানি ছিটকে ছোট ছোট যানবাহন ও পথচারীদের ওপর পড়ছে।

শ্রীমঙ্গল কমলগঞ্জ রুটের সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক প্রভাত রায় বলেন, ‘তিনমাস আগে রাস্তা খোঁড়ার পর মাঝে মাঝে রাস্তার পাশে ইট বিছানো আর মাটি ফেলা ছাড়া কোন কাজ হতে দেখলাম না, দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তাটি খানাখন্দে ভরা ছিল। রাস্তাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে কিন্তু রাস্তার কাজ আর শেষ হচ্ছে না। অনেক কষ্ট করে যানবাহন চালাতে হয়। যাত্রীদেরও অনেক ভোগান্তি সইতে হয়।’

শ্রীমঙ্গলের এসকেডি আমার বাড়ী রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সজল দাশ জানান, সামনে আমাদের পর্যটন সিজন শুরু হবে তাছাড়া নভেম্বরে তিনটি বড় উৎসব ওয়ানগালা,রাস উৎসব ও সেং কুটেস্লাম অনুষ্ঠিত হবে ৷ এই সব অনুষ্ঠানে দেশ বিদেশের যে অতিথিরা আসবেন তাদের এই সড়কে খুব ভোগান্তি হবে তাই আমার দাবী থাকবে সড়কটি যাতে এই উৎসবগুলোর আগেই ঠিক করে ফেলা হয় ৷

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক আরিফ হোসাইন বলেন, ‘এই রাস্তার কাজ শুরু করার পর একটানা বৃষ্টি শুরু হয়। এতে নির্মাণকাজে বিঘ্ন ঘটে। ফলে কাজে একটু ধীরগতি হয়। একপর্যায়ে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। ২৪ অক্টোবর থেকে পুনরায় কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে তা বন্ধ রাখতে হয়েছে। বৃষ্টি না থাকলে আগামী ১৫ দিনের ভেতর কাজ শেষ করা যাবে বলে তিনি আশা করছেন।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত