সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৮:০৩

নবীগঞ্জে জাপা ছেড়ে গণফোরামে যোগাদানের হিড়িক

নবীগঞ্জে জাতীয় পার্টি ছেড়ে গণফোরামে যোগদানের হিড়িক পড়েছে। গত কয়েকদিনে জাতীয় পার্টিসহ এর কয়েকটি অঙ্গসংগঠনের প্রায় ৫০/৬০ জন নেতাকর্মী গণফোরামে যোগ দিয়েছেন। আর শতাধিক নেতাকর্মী খুব শীঘ্রই গণফোরামে যোগ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। নেতাকর্মীরা জানান, তারা এরশাদের মৃত্যুর পর দলটির উপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না তারা। একইসাথে নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মুমিন বাবুর উপর ক্ষোভ ঝাড়েন। অপরদিকে এলাকার সন্তান হিসেবে ড. রেজা কিবরিয়ার উপর আস্থা রেখে গণফোরামে যোগ দিচ্ছেন তারা।

গণফোরামে যোগদানকারী কয়েকজন উল্লেখযোগ্যরা হলেন- উপজেলা জাতীয় পার্টিও সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান কাপ্তান, নবীগঞ্জ উপজেলা যুবসংহতির আহবায়ক ও জেলা কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল আমীন পাঠান ফুল, নবীগঞ্জ পৌর জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি ও নবীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় কৃষক পার্টির সাবেক সভাপতি কমান্ডার-এম এ খালেক, নবীগঞ্জ পৌর জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফতেহ আলম, নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সহ-সভাপতি হাজী সিরাজুল ইসলাম (সাবেক মেম্বার) , নবীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় ছাত্রসমাজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও আউশকান্দি ইউনিয়ন জাতীয় ছাত্রসমাজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং জাতীয় যুব সংহতির সাবেক ইউনিয়ন সভাপতি হেলাল আহমদ, কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়ন জাতীয় যুব সংহতির আহবায়ক জিয়াউর রহমান, দেবপাড়া ইউনিয়ন জাতীয় যুব সংহতির যুগ্ম আহবায়ক বিলাল আহমদ, সদস্য সচিব জাকির হোসেন, ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন জাতীয় যুব সংহতির আহবায়ক সাজ্জাদুর রহমান, দীঘলবাক ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা মোশাহিদ আলী, করগাঁও ইউনিয়ন জাতীয় যুব সংহতির সাবেক সভাপতি মোতাব্বির হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

গত কয়েকদিন ধরে কেন্দ্রীয় গণফোরাম সদস্য ও নবীগঞ্জ উপজেলা আহ্বায়ক আবুল হোসেন জীবনের নেতৃত্বে ড. রেজা কিবরিয়ার ঢাকার বাসভবনে এসব আনুষ্ঠানিক যোগদান অনুষ্ঠিত হয়। যোগদানের সময় ড. রেজা কিবরিয়া তাদের বলেন, ‘সুযোগ পেলে আমি নবীগঞ্জ-বাহুবলের মানুষের পাশে থাকতে চাই।’ এসময় তিনি গণফোরামে যোগদানকৃত নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান।

জাপা ছেড়ে আসা বেশ কয়েকজন নেতা জানান, এরশাদ ছিলেন জাতীয় পার্টির মূলশক্তি। তার মৃত্যুর পর দল আর পূর্বের মত চলছেনা। তাই জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে থাকার আর কোন অর্থ হয়না। তারা আরও জানান, সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম শাহ এএমএস কিবরিয়া নবীগঞ্জের কৃতি সন্তান। তাঁর যোগ্য সন্তান আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া। গত সংসদ নির্বাচনে তিনি নবীগঞ্জ-বাহুবল আসনে সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিয়ে এলাকার মানুষের আস্থাভাজন হয়েছেন। তাই তাঁর সাথে রাজনীতি করার জন্যই গণফোরামে যোগ দিচ্ছেন তারা।

জাতীয় পার্টি কেন ছাড়লেন এবং গণফোরামে কেন যোগ দিলেন, এ প্রসঙ্গে কমান্ডার এম এ খালেক, আতাউর রহমান কাপ্তান, নূরুল আমীন পাঠান ফুল ও হাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে পার্টি ঠিকমত চলছে না। তাই আমরা জাতীয় পার্টি ছেড়েছি। একইসাথে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়ার উপর আমাদের আস্থা রাখতে চাই। তিনি আমাদের এলাকার কৃতি সন্তান। ড. রেজা কিবরিয়ার বাবা প্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া এই এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছেন। তাই তাঁর সন্তান হিসেবে ড. রেজা কিবরিয়াও এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।’

তারা আরও বলেন, ‘গত সংসদ নির্বাচনে ড. রেজা কিবরিয়াকে জোর করে হারানো হয়েছে। তার পক্ষে গণজোয়ার উঠেছিল। রেজা কিবরিয়া প্রমাণ করেছেন, তার সাথে জনগণ রয়েছে। সঠিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তিনি আগামীতে নবীগঞ্জ-বাহুবল আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন। তাই আমরা তার পাশে থাকতে চাই।’

গণফোরামে যোগ দেয়া প্রবীণ রাজনীতিক কমান্ডার এম এ খালেক ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘আমরা বিনা ভোটের এমপির সাথে থাকতে চাইনা। জাতীয় পার্টির মনোনয়নে বিনা ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন এম এ মুনিম বাবু। কিন্তু তিনি জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের পাশ কাটিয়ে নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন। এমপি থাকাকালীন তিনি নিজের আখের গুছিয়েছেন। ’

তিনি আরও বলেন, ‘হয়ত মুনিম বাবু আবারো জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়ে বিনাভোটে এমপি হতে পারেন। কিন্তু আমি আর জাতীয় পার্টিতে থাকতে চাইনা। আমরা ভাল মানুষের সাথে থাকতে চাই। তাই ড. রেজা কিবরিয়ার গণফোরামে যোগ দিলাম।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত