বদরুজ্জামান চৌধুরী

২২ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০১:০৬

কনকনে শীতে সরগরম সিলেটের ফুটপাতের শীতের কাপড়ের ব্যবসা

সারাদেশের মতো সিলেটেও শীত জেঁকে বসেছে। কয়েকদিন ধরেই চলছে শৈত্যপ্রবাহ। শৈত্যপ্রবাহে সব ঠাণ্ডা হয়ে গেলেও ব্যতিক্রম সিলেটের ফুটপাতের শীতের কাপড়ের ব্যবসা। হঠাৎ শীত পড়ায় বেড়ে গেছে শীতের কাপড়ের বিকিকিনি। ফলে এই ব্যবসা এখন বেশ সরগরম। নিম্ন আয়ের মানুষের ভিড় করছেন ফুটপাতের শীতের পোশাকের ভাসমান দোকানগুলোতে।

নগরীর আম্বরখানা, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার ও বন্দরবাজার ঘুরে দেখা যায়, এইসব এলাকার ফুটপাত ও অনেক জায়গায় সড়কের উপর শীতের পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। প্রতিটি ভাসমান দোকানের সামনেই ক্রেতাদের ভিড়। কোথাও একদরে কোথাও দামাদামির মাধ্যমে চলছে ক্রয় বিক্রয়। বিক্রেতারা কেউ ভ্যানে করে, কেউ ফুটপাতে বসে বিক্রয় করছেন নানা বয়সীদের জন্য সোয়েটার, জ্যাকেট, কম্বল, মোজা, হাতমোজা, কান ঢাকা টুপি, শার্ট-প্যান্ট-ফুল হাতা টিশার্ট, জুতাসহ নানা বস্ত্র সামগ্রী। কেউ ডেকে ডেকে ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন, কেউ আবার প্রচারের জন্য ব্যাবহার করছেন সাউন্ড সিস্টেম।

আম্বরখানায় ভ্যানে করে কাপড় বিক্রেতা বিষ্ণু সরকার জানান, সুয়েটার, মোজা, কান ঢাকা টুপি বিক্রয় করেন তিনি। শীত বাড়ায় বেড়েছে বেচাবিক্রিও। বর্তমানে দৈনিক ২-৩ হাজার টাকার পণ্য বিক্রয় হচ্ছে বলে জানান তিনি। সকাল ১০টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে তার বেচা কেনা।

চৌহাট্টায় ফুটপাতে বসে কম্বল বিক্রয় করেন ঝন্টু বিশ্বাস। তার বাড়ি হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জে। শীতের প্রকোপ বাড়াতে প্রতিদিন ৫ হতে ৭ হাজার টাকার কম্বল বিক্রয় করছেন ঝন্টু। সিঙ্গেল সাইজ কম্বল ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা ও ডাবল সাইজ কম্বল ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রয় করেন তিনি।

ঝন্টু জানান, কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় ফুটপাতে তার চায়ের দোকান রয়েছে। শীত মৌসুমে কম্বলের চাহিদা বাড়ায় এই ব্যবসা শুরু করেছেন।

ঝন্টু বিশ্বাস কাছে কম্বল কিনতে আসা সাব রেজিস্টার অফিসের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যজ্ঞেশ্বর রায় জানান, এখানে সাধ্যের মধ্যে কম দামে কম্বল পাওয়া যায়। তাই পরিবারের জন্য কম্বল কিনতে এসেছি।

পুরুষদের শীত বস্ত্রের পাশাপাশি শিশু এবং নারীদের সোয়েটার, জামাকাপড় ও মোজাও ফুটপাতের হকারদের কাছ থেকে কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা। চৌহাট্টায় নারীদের সোয়েটার বিক্রয় করছেন দুলাল। তার নিকট থেকে ১০০-১৫০ টাকা দরে সোয়েটার কিনে নিচ্ছেন নারী ও পুরুষরা। তার পাশেই মোজা, হাতমোজা ও শীতের টুপি বিক্রয় করেন রবিন আহমেদ। মোজা ৪০-৫০ টাকা, হাতমোজা ১০০-১২০ টাকা, কান ঢাকা টুপি ৫০-১০০ টাকায় এসব পণ্য কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা।

মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হতে বিবিএ শেষ করে চাকরি না করে জিন্দাবাজারে ফুটপাতে ব্যবসা শুরু করেছেন নাবিদ ইয়াসিন। তার দোকানেও ক্রেতাদের ভিড়। দুইজন কর্মচারী রেখে প্যাডিং জ্যাকেট, চায়না জ্যাকেট ও ম্যাগি হুডি ৭৫০ টাকা দরে বিক্রয় করছেন নাবিদ।

নাবিদ জানান, বিক্রয় খুব ভাল হচ্ছে। এ ব্যবসা করে মা, বাবা, ভাই, বোন নিয়ে পরিবার চলছে তার।

সিলেটের নিম্ন আয়ের ক্রেতাসহ অনেক নিম্নমধ্যবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্তরাও ফুটপাত থেকে কিনছেন পছন্দসই শীতের পোশাক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত