মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বরমচালে ফের ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে চলতি বছর তৃতীয়বারের মতো ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হলো। এর ফলে সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। বারবার দুর্ঘটনার জন্য কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী।

এদিকে ট্রেনের লাইনচ্যুত বগিগুলো ফেঞ্চুগঞ্জ টু ব্রাহ্মণবাজার আঞ্চলিক সড়কের ওপরে পড়ে থাকায় যান চলাচল বর্তমানে বন্ধ আছে। এতে ট্রেনের বগি অপসারণের পর দুই পাশের সহস্রাধিক যান অপেক্ষমান আছে। যাত্রীরা নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ১০টার দিকে কুলাউড়ার বরমচাল রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে আউটার সিগন্যাল এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিলেটগামী মালবাহী একটি ট্রেন বরমচাল স্টেশনে প্রবেশের আগে হঠাৎ বিকট শব্দে একটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। ট্রেনের মধ্যখানের ওই বগিসহ পেছনের প্রায় ১০-১২টি বগি টেনে হিঁচড়ে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এক পর্যায়ে ট্রেনচালক ইঞ্জিন বন্ধ করেন। ওই সময় প্রায় রেললাইনের ২৫০ থেকে ৩০০টি স্লিপার এবং অর্ধ সহস্রাধিক ক্লিপ ভেঙ্গে যায়।

বর্তমানে এই রেললাইনের বিভিন্ন ত্রুটি বিচ্যুতির কারণে যদিও দুর্ঘটনা ঘটছে তবু কর্তৃপক্ষ কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না।

এলাকাবাসীর দাবি, বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আগে সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেয়াটা দরকার।

কুলাউড়া রেলের উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) জুলহাস মাহমুদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে লাইনচ্যুত বগিটির চাকা ও টুলে সমস্যা ছিল। আমি এর আগে রেলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছিলাম এই বগিটি পরিবর্তন করার জন্য। কিন্তু কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। তদন্ত করার পর সঠিকভাবে জানা যাবে। উদ্ধার কাজ চলছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছর ২৩ জুন কুলাউড়ার বরমচাল এলাকায় দুর্ঘটনাকবলিত হয় ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন উপবন। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ৪ জন। আহত হন দুই শতাধিক যাত্রী। ১৯ জুলাই সিলেট থেকে ছেড়ে আসা জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুলাউড়া রেলওয়ে জংশনে প্রবেশ করার সময় লাইনচ্যুত হয়। ওই ঘটনার পরেরদিন ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও দুর্ঘটনায় পড়ে ট্রেন। সিলেট থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর কালনী এক্সপ্রেসের একটি বগি ২০ জুলাই সকাল ৯টায় কুলাউড়া জংশন রেলস্টেশনে ঢুকার সময় লাইনচ্যুত হয়।