কুলাউড়া প্রতিনিধি

২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৮:০৮

৫ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক, ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি

কুলাউড়ায় ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত

প্রায় পাঁচ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর বিকেল সোয়া ৩টার দিকে চালু হয়েছে সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ। সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের কুলাউড়ার বরমচাল স্টেশনের আউটার সংলগ্ন এলাকায় একটি মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ার সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া দশটার দিকে উপজেলার বরমচাল রেলস্টেশনের আউটার ক্রসিং সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। রেলকর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

জানা যায়, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি থেকে ছেড়ে যাওয়া তারাকান্দা বিসি স্পেশাল (সার বোঝাই মালবাহী) ট্রেনটি কুলাউড়া রেল সেকশনের বরমচাল আউটার ক্রসিং এলাকায় সকাল সোয়া দশটায় পৌঁছামাত্র একটি কোচের চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। এতে সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ঘটনার ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করা দুটি ট্রেন আটকা পড়ে দুটি স্টেশনে। সকালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন মাইজগাঁও স্টেশনে এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন কুলাউড়া স্টেশনে আটকা পড়ে। এছাড়া কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজার -ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে প্রায় দুই ঘন্টা সবধরণের যানচলাচল বন্ধ থাকে। পরে উদ্ধারকারী টোলভ্যান দিয়ে ট্রেনের পিছনের বগিগুলো বরমচাল স্টেশনে নেয়ার পর যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মালবাহী ট্রেনের বগির ( নং- ১০০০২০) ৪টি চাকা লাইনচ্যুত অবস্থায় চালক ট্রেনটি প্রায় ৩শ মিটার এলাকা ট্রেনটি চালিয়ে নিয়ে যান। এতে রেললাইনের ওপর একটি ব্রীজের ৬টি কাঠের স্লিপার ও রেললাইনের প্রায় ৩০০ মিটার জায়গা জুড়ে ৬শতাধিক স্লিপার দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুপুর ১টার দিকে কুলাউড়া উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (লোকো) ও প্রধান ট্রেন পরীক্ষক সিলেটের একটি দল উদ্ধারকারী টুলভ্যান নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। উদ্ধারকারীরা লাইনচ্যুত বগিটি বরমচাল স্টেশনে নিয়ে যায়। এরপর প্রায় ৫ ঘন্টা পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সারাদেশের সাথে সিলেটের ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

কুলাউড়া রেলের উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) জুলহাস মাহমুদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে ট্রেনে ওভার লোডিং, চাকা ও টুলের সমস্যার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে। তাছাড়া টেকনিক্যাল সমস্যাগুলো তদন্ত করার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন আসলে বিষয়টি সঠিকভাবে জানা যাবে।

সিলেট-আখাউড়া রেলসেকশনের (টিআইসি) ট্রাফিক পরিদর্শক ও তদন্ত কমিটির প্রধান মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনায় রেলমন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ৪সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্যরা দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনের জন্য কাজ শুরু করেছেন। উদ্ধার কাজ শেষে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৩ জুন কুলাউড়ার বরমচাল রেলস্টেশনের পাশ্ববর্তী বড়ছড়া ব্রীজ এলাকায় ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ৪জনের প্রাণহানি ঘটে এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়। এরপর ১৯ জুলাই সিলেট থেকে ছেড়ে আসা জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুলাউড়া রেলওয়ে জংশনে প্রবেশ করার সময় লাইনচ্যুত হয়। পরদিন ২০ জুলাই একইস্থানে সকালে আন্তঃনগর কালনী এক্সপ্রেসের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত