শিপার আহমেদ, বিয়ানীবাজার

২১ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ২০:২৩

বিয়ানীবাজারে বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার প্রায় অর্ধেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো শহীদ মিনার নেই! বাঙালির চেতনার প্রতীক শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন নির্দেশনা জারি করেনি। এ সংক্রান্ত কোন নীতিমালা না থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলো ঐতিহাসিক এ প্রতীক স্থাপনের বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না।

বিয়ানীবাজার উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা টিটু কুমার জানেন না উপজেলার কতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। তিনি বলেন, ‘সরকারিভাবে এ নিয়ে কোন নির্দেশনা না থাকায় আমাদের জানা নেই উপজেলা কতটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে।’

জানা যায়, শুধু বিয়ানীবাজার উপজেলাই নয় সিলেট জেলার অধিকাংশ উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়নি দীর্ঘ এত বছরেও। এতে করে শিশু শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত জেলার লাখ লাখ কোমলমতি শিক্ষার্থী শহীদ দিবসের চেতনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নিয়ে দাপ্তরিকভাবে পরিসংখ্যান না বিয়ানীবাজার উপজেলার ১৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৮টি মাধ্যমিক এবং ৬টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে ও বিদ্যালয়ের মাত্র ৪২টিতে এবং মাধ্যমিকে ২৬টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে।

প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার এলাকাবাসীর আর্থিক অনুদান ও সদিচ্ছায় স্থাপন করা হয়েছে। শুধু উচ্চ মাধ্যমিকের মধ্যে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ শহীদ মিনার স্থাপন করা রয়েছে সরকারি অনুদানে। ব্যক্তিগত অনুদানে ২০০৮ সালে বিয়ানীবাজার আদর্শ মহিলা কলেজে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। কুড়ারবাজার মহাবিদ্যালয়, নবীব আলী কলেজ, বৈরাগী আইডিয়াল কলেজ এবং দুবাগ আইডিয়াল কলেজে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে গত বছরেই।

এই বিষয়ে প্রবীণ শিক্ষাবিদ আলী আহমদ বলেন, ‘বাঙ্গালীর ঐতিহাসিক মুহূর্তের মধ্যে ছাত্ররা সবচেয়ে বেশি সম্পৃক্ত ছিল ভাষা আন্দোলনে। ছাত্ররা ১৯৫২ সালের ২১ ফেবব্রুয়ারিতে সরকারের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে। তাঁদের আত্মত্যাগে রচিত হয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারি।’ তিনি বলেন, ‘ভাষা দিবসের চেতনা এবং শহীদদের আত্মত্যাগের মহিমা আরো বিস্তৃত করার জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন করা জরুরী। সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতে নাম মাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। সরকারি বা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে হাতেগোণা।

এ বিষয়ে মোল্লাপুর ইউনিয়ন উচ্ছ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুফিয়ান আহমদ বলেন, ‘সরকারি ভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করার জন্য আর্থিক অনুদান পাওয়া যাবে না জানি তাই এলাকাবাসীর আর্থিক অনুদানে আমার বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মান করেছি।

এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌলদুর রহমান বলেন, ‘উপজেলার কতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে সেভাবে খোঁজ নিয়ে দেখা হয়নি। আসলে আমাদের কাছে শহীদ মিনারের কোন পরিসংখ্যান নেই।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত