সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ মার্চ, ২০২০ ১৮:৪৯

অবৈধ ব্যবসায় কোটিপতি কাউন্সিলর তারেক

সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসীর অভিযোগ

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ ও তার ভাই ইফতে কামরুল হাসান তায়েফ সরকারি ভূমি থেকে অবৈধভাবে মাটি বিক্রিসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। অবৈধ এসব ব্যবসার মাধ্যমে দুই ভাই কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।

তাদের কারণে গোটা এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এই ওয়ার্ডের ঘাসিটুলা, মোল্লাপাড়া, বেতবাজার, চররঘাট ও কলাপাড়া এলাকার বাসিন্দারা।

বুধবার বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এই এলাকার ব্যবসায়ী মঈন উদ্দিন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নগরীর বাঘবাড়ী মৌজার ২০৮৫, ২০৬৯ ও ২০৩৬ নম্বর দাগে (জেএল নম্বর ৯০, খতিয়ান নম্বর ১)  মোট ৫ দশমিক ৭৮ একর ভূমি রয়েছে। ঘাসিটুলার বেতবাজার এলাকার এই জায়গা সুরমার বুকে প্রাকৃতিকভাবে জেগে উঠেছে। ১০/১২ বছর ধরে  এই সরকারী ভুমি থেকে কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ ও তার ছোট ভাই ইফতে কামরুল হাসান তায়েফ মাটি কেটে বিক্রি করছে। তারা ড্রেজারের মাধ্যমে বালু ও মাটি উত্তোলন করে দীর্ঘদিন্ থেকে প্রকাশ্যে এই ব্যবসা চালাচ্ছে। এতে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদিকে  মোল্লাপাড়া জামে মসজিদ, স্থানীয় জি নেট স্কুল ও এলাকার বসতবাড়ি হুমকির মুখে। এলাকাবাসীর পক্ষে বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে সহকারী ভূমি কমিশনার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন (নম্বর ০৫,  ১৩/০২/২০২০)। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টায় পরিদর্শন শেষে তাদের তৈরি টিনশেডের ঘর ভেঙ্গে নিলামে বিক্রি করেন।

তিনি বলেন, মামলার এজাহারে আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। এতে এলাকাবাসী বিস্মিত। আমরা দীর্ঘদিন থেকে দেখছি কাউন্সিলর তারেক ও তার ভাই এই জায়গার মাটি বিক্রি করছে ও টিনশেডের ঘর তৈরী করে নানা কুকর্ম করছে। মামলায় আসামিদের নাম উল্লেখ না থাকায় কাউন্সিলর তারেক তার কুকর্মের প্রতিবাদকারীদের ডেকে মামলায় ঢুকিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন।  কাউন্সিলর তারেক ও তার ভাই চরে আবারো নতুন করে ঘর তৈরী করেছেন। এই ঘরে মাদক ব্যবসা, জুয়া ও পতিতা ব্যবসা শুরু করেছে তারা। এ ঘর থেকে আগে পুলিশের অভিযানে বেশ কয়েকজন পতিতা গ্রেপ্তার হয়েছিল। বর্তমানে ঘরটি অপরাধীদের আস্তানা হয়ে উঠেছে। সন্ধ্যা থেকে বাইরের লোকজন মটরসাইকেলে এসে ঘরে ঢুকে নানা কুকর্ম চালাচ্ছে। এলাকার যুবসমাজও খারাপ পথের দিকে এগুচ্ছে। সরকারী এই জায়গার মাটি বিক্রির ফলে প্রতিরাতে অসংখ্য ট্রাক চলাচল করে। এতে এলাকাবাসীর রাতের ঘুম যেমন হারাম হচ্ছে, তেমনি রাস্তা-ঘাটও দ্রুত নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া তাজ ও তার ভাই তাদেরই আত্মীয় ঘাসিটুলার শফাত উল্লাহর ছেলে শাহাব উদ্দিনের বসতবাড়ি দখলেরও হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন। শাহাব উদ্দিনের স্ত্রী ও দুই মেয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত এ সংক্রান্ত ফোনালাপের অডিও ক্লিপ শুনিয়েছেন উপস্থিত সাংবাদিকদের। তারেক উদ্দিন তাজ ও তার ভাইসহ তাদের অত্যাচার নিপিড়ন থেকে মুক্তি পেতে এবং এই চর থেকে মাটি বিক্রি বন্ধের মাধ্যমে এলাকাকে বিপদ মুক্ত রাখতে তারা প্রধানমন্ত্রী, সিলেট-১ আসনের সাংসদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। এলাকটি এখন নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও তারা সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক কমিশনার সালেহ আহমদ, ছাইদুর রহমান, আব্দুল মতিন, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সোহেল, আলতাফ হোসেন টিটু, অ্যাডভোকেট ছাইদুর রহমান, ইকবাল হোসেন, এখলাছুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, সুয়েল আহমদ, জাহাঙ্গীর হোসেন, সুরুজ আলম, গোলাম কিবরিয়া মাসুকসহ এলাকার সর্বস্থরের সচেতন জনগন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত