তাহিরপুর প্রতিনিধি

১২ মার্চ, ২০২০ ২৩:৪২

অরক্ষিত তাহিরপুরের তিনটি শুল্কবন্দর

করোনাভাইরাস আতঙ্ক

বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তাই এর বিস্তাররোধে দেশের বিভিন্ন বন্দরে ব্যবস্থা নেয়া হলেও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার তিনটি শুল্কবন্দর রয়ে গেছে অরক্ষিত। বন্দরগুলো হলো বড়ছড়া, চারাগাও ওবাগলী) শুল্কবন্দর।

এরইমধ্যে উপজেলার এই তিনটি শুল্ক বন্দরে প্রতিদিন চার শতাধিক ট্রাক নিয়ে চালক ও তার সহযোগী বাংলাদেশে ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে কয়লা, চুনাপাথর নিয়ে ও বাংলাদেশীরা বিভিন্ন ভাবে ভারতে প্রবেশ করছে। তাই এখনই ব্যবস্থা না নিলে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন জেলার সচেতন মহল।

সূত্র জানায়, উপজেলা উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কয়লা, চুনাপাথর আমদানি হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এ কারণে প্রতিদিন শত শত ট্রাক চালক ও শ্রমিকরা কাজের স্বার্থে লেনদেন করছে। আর অনেকেই ভারতে বাংলাদেশীরা চোরাই পথে ভারত যাচ্ছেন ও ভারতীয়রা বাংলাদেশে ঢুকছেন।

তাই উপজেলার এ তিনটি শুল্কবন্দরে দ্রুততর সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশংকা থেকে জেলার একমাত্র বর্ডার হাট বন্ধ করা হলেও এ তিন শুল্কবন্দরের ব্যাপারে নেয়া হয়নি কোনো সিদ্ধান্ত। তবে জেলা প্রশাসক থেকে জানানো হয়েছে সিদ্ধান্ত অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু জেলার সচেতন মহল বলছে যতদিন পর্যন্ত বিমান বন্দরের মত থার্মাল স্ক্যানার মেশিন এখানে বসানো না হচ্ছে ততদিন উপজেলার তিনটি শুল্কবন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখা হোক।

এ ব্যাপারে বড়ছড়া টেকেরঘাট এলাকার বাসিন্দা সুমন মিয়া জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশংকায় সারাক্ষণেই আতংকে আছি। কারণ ভারত থেকে প্রতিদিনেই ট্রাক আসছে আসছে লোক জন তারা করোনায় আক্রান্ত কি না কেউই জানে না পরীক্ষা না করায়। পরীক্ষা করে ঐসব ট্রাক চালক ও তাদের সহযোগীদের প্রবেশ করালে আশঙ্কামুক্ত থাকা যেত। এছাড়াও বিভিন্ন ভাবে ভারতে নাগরিকরা এদেশে প্রবেশ করছে।

কয়লা ও চুনাপাথর ব্যবসায়ীরা জানান, দেশ ও এই এলাকায় বসবাসকারীদের স্বার্থে তিনটি শুল্ক বন্দরে করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য যন্ত্র স্থাপন করা খুবেই প্রয়োজনীয়। না হলে করোনা ভাইরাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তিনটি শুল্কবন্দর বন্দ করাই ভাল। নিজেদের জীবন সুরক্ষার স্বার্থে।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলম জানান, এই বিষয়ে আমরা কঠোর নজরদারী রয়েছে তাহিরপুরসহ জেলা সীমান্ত এলাকা। করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশংকা অনেক শুল্ক বন্দর বন্দ করা হয়েছে। নারায়নতলা বর্ডার হাট বন্ধ করা হয়েছে। আশা করছি দু-তিন দিনের মধ্যেই তাহিরপুর উপজেলার তিনটি শুল্কবন্দর (বড়ছড়া ,চারাগাও, বাগলী) বন্ধ করা হবে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি জানান, উপজেলার তিনটি শুল্ক বন্দর আগত ভারতীয় ড্রাইভারদের বিষয়ে নজরদারী রাখতে হবে এবং তারা যাতে বাংলাদেশের শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের সাথে চলাচল পরিহার করে গাড়িতেই অবস্থা করে। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে। শুল্ক বন্দর বন্ধের বিষয়ে কোন নিদর্শনা আসেনি এখন পর্যন্ত।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ জানান, তাহিরপুরের তিনটি শুল্ক বন্দর দিয়ে  ভারত থেকে ট্রাক দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আনা হলেও নিয়ে আসলেও ট্রাক চালকদের ট্রাকেই বসা থাকতে হবে।  আর এই বিষয়ে  কোন নিদর্শনা আসে নি আসলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত