তাহিরপুর প্রতিনিধি

২২ মার্চ, ২০২০ ১৮:৫৬

করোনাভাইরাস: জনমানব শূন্য তাহিরপুরের দুটি ধর্মীয় উৎসব

প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষের আগমনে মুখরিত হলেও এবার যাদুকাটা নদীর তীরে হিন্দু-মুসলমান ধর্মাবলম্বীর দুটি বৃহৎ উৎসবে শূন্যতা বিরাজ করছে। প্রতি বছরের মত এবারও ২১, ২২ ও ২৩ মার্চ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড় এলাকায় আধ্যাত্মিক মহাসাধক শাহ আরেফিন (রা.) এর ওরস ও বিন্নাকুলি বাজার সংলগ্ন এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের পনতীর্থ অনুষ্ঠানে তারিখ নির্ধারণ হয়। কিন্তু করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় প্রশাসন দুটি উৎসব বন্ধ ঘোষণা করে। যার ফলে দুটি উৎসব কেন্দ্রে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে।

রোববার (২২ মার্চ) যাদুকাটা নদীর তীর ও শাহ আরেফিন মাজার এলাকায় ছিল না কোনো বাদ্য যন্ত্রের আওয়াজ, ছিল না কোনো উলুধ্বনি। গুটি কয়েক মানুষ নীরবে এসে পূজা ও মাজার জিয়ারত করে যান।

হিন্দু সম্প্রদায়ের পনতীর্থে গঙ্গাস্নান করতে আসা সজল দাস জানান, এবার কোন মানুষ নেই। চারদিক একবারেই ফাঁকা। যেখানে মানুষের কারণে পা ফেলা কষ্ট কর ছিল আজ স্থানীয় কয়েকজন মানুষ ছাড়া কোন মানুষ নেই। আমার বাড়ি কাছে হওয়ায় আমি এসেছি। করোনাভাইরাসের কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসমাগম নিষিদ্ধ করায় আর নিজেদের নিরাপত্তার জন্য মানুষজন না আসায় এই শূন্যতা।

শাহ আরেফিন মাজারে আসা শফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিবছর আসি এই উৎসবে। এসময় লাখ লাখ মানুষের আগমনে মুখরিত থাকতো আধ্যাত্মিক মহাসাধক শাহ আরেফিন (রা.) ওরস উৎসব। কিন্তু এবার কোন মানুষ নেই। কোন আয়োজন নেই। এবার করোনাভাইরাসের কারণে সব আনন্দ যেন মাটি হয়ে গেছে।

শাহ আরেফিন মাজার রক্ষনাবেক্ষনকারী ও স্থানীয় কমিটির সভাপতি জালাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আলম সাব্বির জানান, করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ও নিজের জীবন রক্ষার তাগিদেই সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে দুটি উৎসব বন্ধের জন্য সম্মতি পোষণ করায় এবার সকল আয়োজন বন্ধ রয়েছে। তাই কোন পাগল, ফকির, ভক্ত, আশেকানের আগমন ঘটেনি মাজার এলাকায়।

শ্রী অদ্বৈত মহাপ্রভু জন্মধাম, বারুণী মেলা কমিটির সভাপতি ও তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বের সঙ্গে আমরাও আতঙ্কিত তাই হিন্দু মুসলমানের মিলনোৎসব হিসেবে পরিচিত শাহ আরেফিন (রা.)ওরস ও গঙ্গাস্নানে লোকসমাগম এড়াতে উৎসব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দুটি স্থানে কোনো লোকসমাগম হয়নি।

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত