বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি

২৪ মার্চ, ২০২০ ১৮:৪৬

হোম কোয়ারেন্টিনে থাকছেন না বিয়ানীবাজারের বিদেশফেরতরা

প্রবাসে থাকা স্বজনদের নিয়ে করোনা আতঙ্কে দিন কাটছেন প্রবাসী অধ্যুষিত বিয়ানীবাজার উপজেলার বাসিন্দারা। এর মধ্যে ৭৪২ জন প্রবাসী বর্তমানে বিয়ানীবাজারে অবস্থান করলেও থাকছেন না হোম কোয়ারেন্টিনে। নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পাড়া-মহল্লায়। অনেকে আবার হোম কোয়ারেন্টিন কি সেটাও জানেন না। এতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বশীল বিভিন্ন পক্ষ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও তার সুফল পাওয়া নিয়ে রয়েছে সংশয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের করোনাভাইরাস সংক্রমিত দেশ থেকে আসা প্রবাসীরা বর্তমানে নিজেদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। তবে এসব প্রবাসীদের মধ্যে অধিকাংশই থাকছেন না হোম কোয়ারেন্টাইনে। মানছেন না স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা। তারা বাড়িতে না থেকে হাটবাজারে ঘুরছেন, চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন আর মিশছেন বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে।

এর মধ্যে বিদেশফেরত কিছু প্রবাসীর জ্বর-কাশি থাকলেও তারা বাড়িতে অবস্থান না করে সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদেশ থেকে দেশে ফেরা প্রবাসীরা ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে এই আদেশ ভঙ্গ করলে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। তারপরও বিদেশ ফিরত অনেকেই হোম কোয়ারেন্টিনে থাকছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বিদেশফেরত এসব প্রবাসীদেরকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নানাভাবে সচেতন করার চেষ্টা করা সত্ত্বেও তারা সেসব কানে তুলছেন না। উপরন্তু গ্রামের সর্বত্রই অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা। ফলে করোনাভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলা বিয়ানীবাজার।

এদিকে, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিয়ানীবাজারে করোনাভাইরাস ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্কতা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। করোনা প্রতিরোধে শুক্রবার থেকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সভা সমাবেশ বন্ধসহ সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান ও গণজমায়েত হয় এরকম অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সকল হাটবাজারের ওষুধের দোকান ছাড়া অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় উপজেলা প্রশাসন।

বিয়ানীবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর মিসবা উদ্দিন জানান, যারা সম্প্রতি প্রবাস থেকে এসেছেন তাদের এবং তাদের পরিবারকে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সচেতন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ প্রবাসীরাই হোম কোয়ারেন্টিন না মেনে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এতে প্রবাসীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের পরিবার ও এলাকাবাসী। এখানে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো উচিত বলেও জানান তিনি।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমি মাহবুব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে প্রবাসীদের একটি তালিকা পেয়েছি। সেখান থেকে বিয়ানীবাজারের প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা এবং কিভাবে থাকবেন সে বিষয়টি তাদের অবহিত করছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত