১৮ এপ্রিল, ২০২০ ১৯:১০
করোনাভাইরাস সংক্রমণকালে সারাদেশের কল-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার বন্ধ হলেও ছুটি দেওয়া হয়নি চা বাগানগুলোতে। ফলে করোনা ঝুঁকিতে প্রতিদিন দেশের ২৩০টি চা বাগানে কাজ করছেন দেড় লক্ষাধিক চা শ্রমিক।
চা বাগানগুলোতে স্বাস্থ্য সেবার তেমন কোন সু-ব্যবস্থাও নেই। তাদের বসত বাড়ির অবস্থাও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাও অসম্ভব তাদের জন্য।
এর আগে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ছুটির দাবিতে গত ১১ এপ্রিল শনিবার সকাল ৯টায় একযোগে ২৩০টি চা বাগানে চা শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে মানববন্ধন শেষে বুধবার চা শ্রমিকদের রক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে লিখিত একটি আবেদন প্রেরণ করা হয়। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাখন লাল কর্মকর্তার ও সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরীসহ কেন্দ্রীয় কিমিটির নেতৃবৃন্দ এ আবেদনে স্বাক্ষর করেন।
চা শ্রমিক নেতা ও মাসিক চা মজদুর পত্রিকার সম্পাদক সীতরাম বীণ বলেন, যেখানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে সারাদেশ এখন করোনা ঝুঁকিতে, সেখানে একমাত্র দেড় লক্ষাধিক চা শ্রমিকদের ঝুঁকির মাঝে রেখে তাদের ছুটি বাতিল করা হয়।
তিনি বলেন, চা শ্রমিকদের ৯৫ শতাংশই নারী শ্রমিক। তাদের কর্মস্থল পাহাড়ি উঁচু নিচু টিলা ভূমি। সেখানে স্বাস্থ্য সেবার কোন সুবিধা নেই। তারা কোন প্রকার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করছে না। বিশেষ করে উত্তোলিত চা পাতা ওজন দিয়ে ট্রাকে তোলার সময় গাদাগাদি করে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন, সারাদেশের ২৩০টি চা বাগানের নিবন্ধিত ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় দেড় লক্ষাধিক চা শ্রমিক রয়েছে। এই দেড় লক্ষাধিক চা শ্রমিক ও তাদের পরিবার এখন সম্পূর্ণরূপে করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গত ৩১ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সের সময় সিলেটের জেলা প্রশাসক বলেছিলেন এ বিভাগের চার জেলা করোনামুক্ত। আর চা বাগানেও করোনার শঙ্কা নেই। তবে বর্তমান অবস্থায় সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় করোনা সংক্রমিত রোগী রয়েছে এবং করোনা আক্রান্ত হয়ে রোগী মৃত্যুবরণও করেছে। এখন পুরো বিভাগ লকডাউনে আছে। তারপরও চা বাগানের শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এরপরও চা শ্রমিকদের ছুটি না দিলে চা শ্রমিক ইউনিয়নের পরবর্তী সভা করে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আপনার মন্তব্য