নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ এপ্রিল, ২০২০ ০০:২৭

ব্লাড ব্যাংকে রক্ত সংকট, তাই রক্তদান কর্মসূচীর আয়োজন কাউন্সিলর আজাদের

বর্তমান করোনা সংকটে সিলেটে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ব্লাড ব্যাংকে দেখা দিয়েছে রক্ত সংকট। একথা জানতে পেরে সিলেট সিটি করপোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্বেচ্ছায় রক্তদানের উদ্যোগ নেন। তিনি ২১জনকে সাথে নিয়ে এসে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন।

এই রক্তের সংগ্রহকে বড় করতে রোববার সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে আরও বড় আকারে রক্তদানের কর্মসূচীর আয়োজন করেছেন তিনি।

শনিবার (১৮ এপ্রিল) সাড়ে ১১টায় 'তুচ্ছ নয় রক্তদান, বাঁচাতে পারে একটি প্রাণ' স্লোগানে নগরীর চৌহাট্টাস্থ মুজিব জাহান রেড ক্রিসেন্ট কেন্দ্রে স্বেচ্ছায় রক্তদানের কার্যক্রম আয়োজন করা হয়।

কাউন্সিলর আজাদ জানান, মুজিব জাহান রেডক্রিসেন্ট কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মো. আবু সালেহ খানের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন তাদের ব্লাড ব্যাংকে রক্ত সংকট দেখা দিয়েছে। তাই তিনি রক্তদান করার জন্য তার এলাকার যুবক ও দলীয় নেতা কর্মীদের আহবান জানান। তার আহবানে সারা দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে আসেন।

রক্ত দিতে আসা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শওকত হাসান মানিক (৩২) বলেন, এ নিয়ে ৭ বার রক্ত দিচ্ছি। আজাদ ভাই বললেন বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্লাড ব্যাংকে রক্ত সংকট হয়েছে। তাই রক্ত দিতে আসলাম।

কাউন্সিলর আজাদের উৎসাহে তারা রক্ত দিতে এসেছেন বলে জানান ছাত্রলীগ নেতা আব্দুস সালাম রাহাত (২৭), জুবায়ের চৌধুরী, গাড়ি চালক সুমন মিয়াসহ (২৬) আরও  অনেকে।

রক্ত দিতে আসেন কুচাই পশ্চিমবাগ আবাসিক এলাকা পুরাতন জামে মসজিদের ইমাম হাফিজ মো. সাইফুল্লাহ । তিনি বলেন, আমার শ্যালক ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের চৌধুরীর মারফত জানতে পারলাম রক্ত সংকটের কথা। তাই ছুটে আসি রক্তদানের জন্য। রক্তদানে ইসলামে কোনো নিষেধ নেই। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত মানুষের জীবন রক্ষায় কাজ করা। রক্তদান করে একজনের জীবন বাঁচানোর মত উত্তম কাজ আর হতে পারে না।
 
মুজিব জাহান রেডক্রিসেন্ট সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে শেষ গত ১৭ মার্চ ৫০ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছিল। এরপর লকডাউন, ও স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার কারণে রক্ত সংগ্রহ বন্ধ হয়ে যায়। ২৬ মার্চের পরই স্টকে থাকা রক্তও শেষ হয়ে যায়। এরপর থেকে রক্তের চাহিদা থাকলেও যোগান দিতে পারছিলেন না রেডক্রিসেন্ট কর্তৃপক্ষ।  

সিলেট রেড ক্রিসেন্ট এবং মাতৃমঙ্গল ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিচালক ডা. সুধাময় মজুমদার বলেন, রক্তদানকারীদের মধ্যে একটি বড় অংশ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই করোনা পরিস্থিতির কারণে নতুন করে কেউ রক্ত দিতে আসতে পারছেন না। কারণ স্কুল কলেজ সব বন্ধ। তাই রক্ত সংকট দেখা দিয়েছে। বতর্মান পরিস্থিতিতেও রক্তের চাহিদা আছে কিন্তু যোগান নেই। আমাদের ৩৬৫ জন থ্যালেসমিয়া রোগী আছেন। যারা নিদিষ্ট সময় পর পর রক্ত নেন। এরকম সংকটের কারণে তাদেরকেও সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। তাই কাউন্সিলর আজাদের এই কর্মসূচিতে অনেক ভালো হয়েছে। এতে অন্তত চলতি মাসসহ আগামী রমজান পর্যন্ত রক্ত সংকট কিছুটা লাগব হবে।

কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, মুজিব জাহান রেডক্রিসেন্ট কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মো. আবু সালেহ খানের মাধ্যমে জানতে পারি এখানে রক্ত সংকট আছে। তাই আমি আমার এলাকার যুবক ও দলীয় কর্মীদের বলি। তখন তারা রক্তদানে আগ্রহ প্রকাশ করলে আজ তাদের নিয়ে রক্তদান করতে এসেছি। রক্তদান করা একটি মহৎ কাজ। তাই আগামী কাল সকাল সাড়ে ১১টায় সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে আরও বড় আকারে রক্তদানের কর্মসূচী করা হবে। প্রায় ১০০ ব্যাগের টার্গেট আমাদের। আশা করি আগামীকাল সেটা পূরণ হবে।

তিনি বলেন, আমি মূলত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে কাজ করছি৷ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এই সময়ে যার যার জায়গা থেকে কাজ করতে। তাই আমি আমার সাধ্যমত জনগণকে সহায়তা ও পাশে থাকার চেষ্টা করছি। তাছাড়া এই মহামারীর সময় একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি আমার দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত