সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ মে, ২০২০ ২১:৩৩

বিভিন্ন দাবীতে চা শ্রমিকদের মানববন্ধন ও সমাবেশ

শ্রমিকদের মজুরি-স্বাস্থ্য-খাদ্যের নিশ্চয়তা প্রদান, সবেতন চা বাগান বন্ধ,পর্যাপ্ত রাষ্ট্রীয় ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিতসহ নানা দাবিতে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, লাক্কাতুরা শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২ মে) সকাল ১০টায় লাক্কাতুরা চা বাগানে উক্ত মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে চা শ্রমিকদের দাবিগুলো হল- সবেতন চা বাগান ছুটি ঘোষণা কর। চা শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। চা বাগানের শ্রমিকদের ঝুঁকি ভাতা দাও। চা বাগানের দৈনিক মজুরি ৪০০ টাকা নির্ধারণ কর।

বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলার সদস্য ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন এর সংগঠক বিরেন সিং এর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সদস্য আমেনা বেগম, হৃদয় লোহার। আরও উপস্থিত ছিলেন ছন্দা লোহার, ঊষা রানী গনজু, অনিতা লোহার, সুমি দাস, চামলী লোহার, কুনি দাস, বাসনা লোহার প্রমুখ।

বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশেও এখন করোনা মহামারীতে মানুষের মৃত্যু বেড়ে চলেছে। সিলেটও সেই আক্রমণের বাইরে নয়। করোনা পরিস্থিতিতে লাক্কাতুরাসহ অন্যান্য চা বাগানের শ্রমজীবী-নিম্ম আয়ের মানুষ আছেন চূড়ান্ত খাদ্য ও স্বাস্থ্য সংকটে। বর্তমানে সারাদেশ লকডাউন এ থাকলেও চালু আছে চা বাগান। ‘করোনা আক্রান্তের সম্ভাবনা নেই’ এই অজুহাতে বাগান চালু হলেও প্রচণ্ড ঝুঁকির মাঝে চা শ্রমিকরা কাজ করছেন। নিয়মানুসারে তাদের ঝুঁকি ভাতা দেয়ারও কোনো পরিকল্পনা ও ইচ্ছা মালিকদের নেই। শ্রমিকরা পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় ত্রাণ সহযোগিতা।

তারা বলেন, সরকার ও জনপ্রতিনিধিরা ‘বাগান খোলা রাখার’ যুক্তিকে সামনে নিয়ে এসে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার ও আড়াল করছেন। বাস্তবে চা শ্রমিকের দৈনিক ১০২ টাকা যে মজুরি মালিকপক্ষ হতে পায় তা পরিবারের ভরণপোষণ এর জন্য খুবই অপ্রতুল। ফলে স্বাভাবিক সময়ে বাগানের বাহিরে বিকল্প কাজের যে সুযোগ ছিল লকডাউন অবস্থায় তাও নেই। ফলে প্রতিটি শ্রমিকের রাষ্ট্রীয় ত্রাণ সহযোগিতা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।

বক্তারা আরও বলেন, আবার কিছু ত্রাণ বরাদ্দ হলেও লাক্কাতুরা বাগানের প্রায় ৭০০ পরিবারের মধ্যে কিছু সংখ্যক পরিবার ত্রাণ পেয়েছে যা খুবই সামান্য। তাছাড়া তা বিতরণের ব্যাপারে নানা অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে। সারাদেশের মত সিলেটের চা বাগানেও করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তাই চা শ্রমিকদের সবেতন ছুটি দেয়া এখন সময়ের দাবি এবং আমরা সেই দাবি করছি। করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে চলছে সরকার ও মালিকপক্ষের নানা চক্রান্ত।শ্রমিক সমাজ এই চক্রান্ত মেনে নেবে না। চা শ্রমিক সহ সারাদেশের সচেতন মহল ও মেহনতি শ্রমিক সমাজকে লড়াইয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত