সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ অক্টোবর, ২০২০ ১৭:৫৭

ইউএনওর ফাঁকা গুলি: এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রকিবুর রহমান খান নিজের নিরাপত্তার জন্য নতুন একটি শটগান কিনেছিলেন। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা কমপ্লেক্সে নিজের সরকারি বাসভবনের পুকুর পাড়ে তিনি চারটি টেস্ট ফায়ারিং করেন। রাতে ইউএনওর ভবনের কাছে গুলির শব্দ শুনে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ।

এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গার ইউএনও রকিবুর রহমান খান। তিনি বলেন, দুই দিন আগে তিনি ঢাকার একটি অস্ত্রের দোকান থেকে ওই শটগানটি কিনেছিলেন। কিন্তু ওই দোকানে গুলি চালানো পরীক্ষা করে দেখার জায়গা ছিল না। ফলে তিনি অস্ত্রটি পরীক্ষা করে দেখতে পারেননি। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার সরকারি ভবনের পুকুরের দিকে চারটি গুলি চালিয়ে অস্ত্রের পরীক্ষা করেন তিনি।

এদিকে দোকান থেকে পরীক্ষা না করে অস্ত্র কিনে নিজের সরকারি ভবনের কাছে গুলি ছুড়ে পরীক্ষা করার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে রাতেই ভাঙ্গা থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।

আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান ও ব্যবহার বিধিমালা ২০১৬ এর ২৯ (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নতুন অস্ত্র ক্রয় ও মেরামতের সময়ে টেস্ট ফায়ারিং, আত্মরক্ষা ও টার্গেট অনুশীলনের উদ্দেশ্যে গুলি ব্যবহার করা যাবে। টেস্ট ফায়ারিংয়ের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচটি গুলি ব্যবহার করা যাবে। ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-৪-এর এই নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অস্ত্র কেনার সময় টেস্ট ফায়ারিং করা যাবে এবং বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান এ সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র দেবে। এই বিধিমালা অনুযায়ী, অস্ত্র কিনে আনার আগে দোকানেই পরীক্ষা করতে হবে। বাড়িতে এনে পরীক্ষা করার সুযোগ নেই।

ওই বিধিমালার ২৫ (ক) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, অন্যের ভীতি বা বিরক্তি উদ্রেক করতে পারে এমনভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর রহমান বলেন, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইউএনওর সরকারি বাসভবন এলাকা থেকে পরপর চারটি গুলির শব্দ শোনা যায়। এই শব্দে এলাকাবাসীর মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় তিনি উপপরিদর্শক (এসআই) শওকত হোসেনকে ঘটনাস্থলে পাঠান।

এসআই শওকত হোসেন বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউএনওর সঙ্গে দেখা ও কথা বলতে পারেননি। তবে তার কথা হয় ইউএনওর বাড়ির নিরাপত্তায় নিয়োজিত অস্ত্রধারী আনসার সদস্য মো. আমিনুর রহমানের সঙ্গে। তিনি তাকে জানান, ইউএনও দুই দিন আগে কেনা শটগান থেকে পুকুর পাড়ে গিয়ে চারটি গুলি ছোড়েন। এসআই শওকত হোসেন বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

ভাঙ্গা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজী রবিউল ইসলাম বলেন, তিনি খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠান। পুলিশের পক্ষ থেকে রাতেই জিডি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভাঙ্গার ইউএনও রকিবুর রহমান খান বলেন, ‘আমি নতুন শটগান কিনেছি। তা পরীক্ষার জন্য পাঁচটি পর্যন্ত গুলি ব্যবহার করতে পারি। কিন্তু আমি চারটি গুলি ছুড়েছি পুকুরে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনে দেওয়া আছে, নতুন শটগান কিনলে পরীক্ষা করার জন্য ফাঁকা গুলি ছোড়া যাবে। আমি আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করিনি।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত