সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ জুলাই, ২০১৬ ১৫:৪৫

নতুন মা-বাবা পেল ‘পাগলী’র সন্তান

প্রায় ৩ সপ্তাহ আগে খাগড়াছড়ি শহরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী সন্তান প্রসব করেন। নবজাতকটির পিতৃপরিচয় পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় জানান, রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান নাম-পরিচয়হীন ওই নারী, যাকে সবাই 'পাগলী' নামেই ডাকে। সম্প্রতি ওই নারীকে শহরের শাপলা চত্বর সংলগ্ন নির্মাণাধীন একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় দেখতে পান খাগড়াছড়ি পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী জাহেদা বেগম। তিনি দেখেন পাশে থাকা নবজাতককে ওই 'পাগলী' খামচে ধরছেন। এ দেখে জাহেদা নবজাতকটিকে নিজের কাছে নেন এবং পৌরসভার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে নিয়ে যান। এরপর পাগলী ও নবজাতককে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ছেলেশিশুটিকে নিজের কাছে রেখে দেন জাহেদা।

সংশিষ্ট লোকজন আরো জানায়, এরপর থেকে শহরের মুসলিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাহেদা বেগমের কাছে শিশুটিকে দত্তক নিতে আসেন অনেকে। তেমনই এক দম্পতি মো. বাবুল ও রাবিয়া বেগম। জেলার গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের পথাছড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা তাঁরা। বাবুল পেশায় স' মিল শ্রমিক। ১২ বছরের দাম্পত্য জীবনে নিঃসন্তান তাঁরা। তাই শূন্য কোল পূরণ করার আঁকুতি জানিয়ে হাত পাতেন জাহেদা বেগমের কাছে।

বিষয়টি পৌর মেয়র রফিকুল আলমকে জানান জাহেদা। মেয়র কথা বলেন পুলিশ সুপার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে। তাঁরা শিশুটিকে ওই দম্পতির কাছে তুলে দিতে সম্মত হন।

খাগড়াছড়ি নোটারি পাবলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে হলফনামার শর্ত সাপেক্ষ গতকাল বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ি পৌরসভায় পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলী, পৌর মেয়র রফিকুল আলম, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শাহ আলম, জাহেরা বেগমের উপস্থিতিতে ওই দম্পতির কাছে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয়।

আনন্দে আত্মহারা নতুন মা রাবিয়া বেগম বলেন, ‘আজ থেকে ওকে আমি আমার সন্তান হিসেবেই মানুষ করব। ওর লালন-পালন, ভরণ-পোষণ, লেখাপড়াসহ যাবতীয় কিছুই এখন আমাদের।’

বাবা মো. বাবুল মিয়া বলেন, ‘শিশুটি আমাদের পরিচয়ে বড় হবে এবং বর্তমান ও ভবিষ্যতে আমাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ওয়ারিশ হিসেবে গণ্য হবে।’

জাহেদা বেগম বলেন, ‘শিশুটি বাবা-মায়ের পরিচয় পেয়েছে এটা ভেবেই অনেক ভালো লাগছে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত