আসামের জঙ্গল থেকে ভেসে আসা একটি বন্য হাতি বুধবার সিরাজগঞ্জ জেলার চর কাজিপুরে ঘুরছিলো।

বন বিভাগের প্রধান বনরক্ষক ইউনুস আলী এই খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হাতিটিকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

বনবিভাগের পাশাপাশি বন্য হাতিটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন।

সংস্থার কর্মকর্তা আশরাফুল হক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বন্য হাতিটি যত উজান থেকে ভাটির দিকে আসছে, মানুষের সাথে দ্বন্দ্ব সংঘাতের ঝুঁকি বাড়ছে।

সোমবার হাতিটি যখন বগুড়ার সারিয়াকান্দির চর হরিরামপুরে ছিলো, আশরাফুল হক নৌকায় করে ঘণ্টা চারেক হাতিটিকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তিনি বলেন, তখনই নৌকায় করে বহু উৎসুক মানুষকে চরে যেতে দেখেছেন।

"যেহেতু হাতিটি চরের মধ্যে উঁচু কাশবনের মধ্যে ছিলো, ফলে দেখার জন্য কেউ কেউ চরে নেমে পড়ছিলো। আমরা বারণ করছিলাম, তারা কান দেয়নি।"

তিনি বলেন, মাঝিদের কাছে তিনি শুনেছেন একদল মানুষকে হাতিটি তাড়া করেছিলো। ঝাঁপ দিয়ে নদীতে পড়ায় তাদের মোবাইল ফোন নষ্ট হয়ে যায়।

"সমস্যা হচ্ছে, অনেক মানুষ বুঝতে পারছে না, বন্য হাতিকে উত্যক্ত করলে ভয়ানক পরিণতি হতে পারে।"

আশরাফুল হক বলেন, এখনও পর্যন্ত জনপদ থেকে দূরত্বে রয়েছে, তবে যমুনার অনেক চরে জনপদও রয়েছে, এবং একি পর্যায়ে মানুষের সাথে সংঘাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

প্রধান বনরক্ষক ইউনুস আলী বলেন, হাতিটির গতিবিধি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

তিনি জানান, আসামে এবং দিল্লিতে ভারতের বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের সাথে তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। ভারতের একটি বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে আসার প্রস্তুত নিচ্ছে।

"আমাদের চেয়ে তারা বন্য হাতির আচরণ এবং তাদের উদ্ধার সম্পর্কে বেশি জানেন। আমরা অপেক্ষা করছি।"

ইউনুস আলী জানান, বন বিভাগের একটি প্রতিনিধিদল এ মুহূর্তে দিল্লিতে রয়েছেন। তারাও ভারতের বন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলছেন।

জুনের শেষ ভারতের আসাম থেকে দলছুট হয়ে হাতিটি নদীর স্রোতে ভেসে প্রথমে বাংলাদেশের নীলফামারীতে ঢোকে। পরে ব্রম্মপুত্র এবং যমুনা দিয়ে ভাটির দিকে ভাসতে ভাসতে হাতিটি এখন সিরাজগঞ্জের একটি চরে।