সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ এপ্রিল, ২০১৭ ১১:১৮

ভোগ মডেল রাউধা আতিফের মৃত্যু রহস্য তদন্তে রাজশাহীতে মালদ্বীপ পুলিশ

রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী মালদ্বীপের ভোগ মডেল রাউধা আতিফ আত্মহত্যা করেছেন তা বিশ্বাস করছেন তা তার পরিবার। ময়নাতদন্তে আত্মহত্যা কথা বলা হলেও পরিবার বলছে, রাউধা আত্মহত্যা করার মতো মেয়েই নয়। এ অবস্থায় রাজশাহী এসেছে মালদ্বীপের পুলিশের দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

সোমবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকা থেকে বিমানে করে রাজশাহীর শাহ্ মখদুম বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। এরপর তারা রাজশাহী সার্কিট হাউজে গিয়ে রাতযাপন করেন। তারা রাউধার অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে রাজশাহীতে এসেছেন।

ওই দুই কর্মকর্তা হলেন, মালদ্বীপ পুলিশের সিনিয়র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রিয়াজ ও পরিদর্শক আহমদ আলী।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মালদ্বীপের পুলিশের এই প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পুলিশ সদর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসেনি। দেশে এসেই তারা সরাসরি মহানগর পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছে। রাউধার ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যুর ঘটনা ও মামলা এখানে হওয়ায় তারা আলাদা করে তদন্ত করতেও পারেন না। তবে সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময় করতে পারেন। এ রকম হলে পুলিশ তাদের সহায়তা করবে।

আরএমপির উপ-কমিশনার (পশ্চিম) আমীর জাফর বলেন, ‘আত্মহত্যার ঘটনাটি আমরায় গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। থানায় দায়ের করা অপমৃত্যুর মামলাটিরও তদন্ত চলছে। বর্তমানে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক রাশিদুল ইসলাম মামলাটির তদন্ত করছেন। আত্মহত্যা করেছেন, কিন্তু কেন করেছেন-তা জানতেই এই তদন্ত করা হচ্ছে। তা না হলে শুধু ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দিয়েই মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া যেত। এরই মধ্যে রাজশাহীতে মালদ্বীপের পুলিশ আসলেন। তারা হয়তো রাউধার পরিবারের সদস্যদের ডাকেই এসেছেন।’

মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে বিমানবন্দরে এসে পৌঁছলে তাদের স্বাগত জানান নগরীর শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান ও  মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাশেদুল হক।

এর আগে গেল বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) থেকেই রাজশাহীতে অবস্থান করছেন রাউধার বাবা মোহাম্মদ আতিফ ও মা আমিনাথ মুহারমিমাথসহ দুই ভাই। শনিবার সকালে তারা পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনাস্থল ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেল পরিদর্শন করবেন। এ সময় তারা রাউধার সহপাঠী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের সেক্রেটারি আব্দুল আজিজ রিয়াদ বলেন, ‘মালদ্বীপের গণমাধ্যমে রাউধার আত্মহত্যার ঘটনাটিকে ভিন্নভাবে প্রকাশ করা হয়েছে বলে শুনেছি। সে কারণে হয়তো তাদের পুলিশের একটি টিম এসেছে। তবে এখনো তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।’

গত ২৯ মার্চ (বুধবার) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষে ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় রাওদা আতিফের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। এরপর ৩১ মার্চ তার পরিবারের সম্মতিতে ময়নাতদন্ত শেষে নগরীর হেতেখাঁ কবরস্থানে দাফন করা হয়। এমবিবিএস ১৩ তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রাউধা। বিদেশি কোটায় ভর্তির পর গত বছরের ১৪ জানুয়ারি মহিলা হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ওই কক্ষে ওঠেছিলেন তিনি।

২০১৬ সালের অক্টোবরে বিখ্যাত ‘ভোগ ইন্ডিয়া’ সাময়িকীর নবম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সংখ্যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মডেলদের নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ‘বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য্য উদযাপন’ (সেলিব্রটিং বিউটি ইন ডাইভার্সিটি) শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছিলেন মালদ্বীপের ‘নীলনয়না’ এই মডেল। উঠতি মডেল হিসেবে রাউধার ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত