সিলেটটুডে ডেস্ক

০৭ অক্টোবর, ২০১৭ ০৩:৫০

রোহিঙ্গাদের নাস্তিক বানানোর চেষ্টা চলছে: আহমদ শফী

রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাস্তিক বানানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী। তিনি বলেন, ‘এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে খুব সতর্ক থাকতে হবে। তাদের গ্রামে গ্রামে মসজিদ মাদ্রাসা গড়ে তুলতে হবে।’

শুক্রবার চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে জুমার নামাজ শেষে হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত এক সমাবেশে যোগ দেন তিনি। নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে আয়োজিত ওই সমাবেশ শেষে একটি র‌্যালি বের করা হয়।

হেফাজতের যুগ্ম মহা-সচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, “রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণ করা হবে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসনকে বলতে চাই, মসজিদ-মাদ্রাসায় হাত দিলে তা ভেঙে দেওয়া হবে।”

সমাবেশে সংগঠনের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, “অং সান সু চি একজন আন্তর্জাতিক জঙ্গি। তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। গণহত্যার দায়ে তাকে আন্তর্জাতিক আদালতে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।”

সরকারের প্রতি কূটনৈতিকভাবে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ এবং তাতে কাজ না হলে সম্পর্ক ছিন্নের দাবি করেন বাবুনগরী।

“তারপরও যদি না হয়, সু চির বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিন। আমরা জিহাদের জন্য তৈরি আছি।”

জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, মুসলিম রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে হবে।

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে গণহত্যা বন্ধ করতে হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত মিয়ানমারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করাসহ কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রাখা।বাংলাদেশ সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করা।’

বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে জাতিসংঘের দিকে। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার জন্য সেফ জোন ঘোষণা করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি পৃথিবীতে বিপন্ন জাতিতে পরিণত হবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গারা মজলুম, নির্যাতিত। মিয়ানমারের মুসলমানরা সন্ত্রাসী নয়। যারা মিয়ানমারের মুসলমানদের সন্ত্রাসী বলবে তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী।

তারা বলেন, নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া মানবিক ও ইমানি দায়িত্ব।  ১৯৭১ সালে আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের হিন্দুরা আমাদের অনেক ভাই-বন্ধুদের আশ্রয় দিয়েছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হামলার সময় আমাদের অনেক ভাই-বন্ধু, মুক্তিযোদ্ধা ভারতে আশ্রয় পেয়েছিল হিন্দুদের কাছে। মানবিক কারণে হিন্দুরা যদি আশ্রয় দিতে পারে তবে আমরা মুসলমান ভাইদের বাংলাদেশ আশ্রয় দিতে পারব না কেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- নায়েবে আমীর মহিবুল্লাহ বাবুনগরী, নুর হোসেন কাশেমী, আবদুল হামিদ, জুনায়েদ বাবুনগরী, সেলিম উল্লাহ আল্লামা হাফেজ তাজুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, আল্লামা লোকমান হাকিম, মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহি, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জুনাইদ আল হাবিব, আল্লামা ইসহাক নূর, মাওলানা আনাস মাদানি, মাওলানা সরোয়ার কামাল আজিজী, মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী, মাওলানা ইসহাক মেহরিয়া, মাওলানা হাবিবুল্লাহ আজাদী প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত